মহামারির শুরুতে চালু করা আর্থিক সহায়তা ঝুঁকিতে থাকা কানাডিয়ানদের আয় ধরে রেখে সুস্থ্য থাকতে সহায়তা করেছে। তবে ব্যবসার প্রতি সরকারের সহায়তা ছিল অত্যধিক উদার এবং সরকারি নীতিতে ব্যবসায়ী গ্রুপগুলোর প্রভাব ছিল অত্যধিক। এমনটাই বলছেন অর্থনীতিবিদরা।
প্রায় আড়াই বছর আগে কোভিড-১৯ এর বিস্তার কমাতে ফেডারেল সরকারকে অর্থনৈতিক কর্মকা- বন্ধ রাখার মতো নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল। এই শাটডাউনের প্রভাব যাতে কর্মী ও ব্যবসার ওপর কম হয় সেজন্য মহামারি সহায়তা ঘোষণা করতে হয়েছিল সরকারকে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দুটি কর্মসূচি হলো কানাডা ইমার্জেন্সি রেসপন্স বেনিফিট এবং কানাডা ইমার্জেন্সি ওয়েজ সাবসিডি।
শুমারির তথ্যের ভিত্তিতে স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার সাম্প্রতিক বিশ্লেষণ বলছে, ২০২০ সালে দুই-তৃতীয়াংশ প্রাপ্ত বয়স্ক কানাডিয়ান মহামারি সহায়তা পেয়েছেন, যা আয় হ্র্সা ও অসমতা কমাতে ভূমিকা রেখেছে।
তবে এই কর্মসূচিগুলোর সাফল্য ও ব্যর্থতা নিয়ে ভুতাপেক্ষ মূল্যায়ন করছেন অর্থনীতিবিদরা। অনেকেই বলছেন, যেকোনো মূল্যায়ন করতে গেলে ওই সময় জনগণ ও মানুষ যে অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিল এবং জনগণকে সুস্থ্য রাখেত জরুরি প্রয়োজনগুলো বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজণ। এই দৃষ্টিকোণ থেকে সিইআরবি ব্যাপকভাবে সফল কর্মসূচি। কানাডা ইমার্জেন্সি ওয়েজ সাবসিডি একইভাবে ব্যর্থ। কানাডা ইমার্জেন্সি রেসপন্স বেনিফিটের অর্থ দ্রুত পাওয়া গেছে, যা লোকজনকে বাড়িতে থাকতে সহায়তা করেছে। জনগণের জীবন বাঁচাতে এটাই আমরা চেয়েছিলাম। অন্যদিকে, সিইডব্লিউএস এসেছে অনেক দেরিতে। এটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক ছিল না এবং নাটকীয়ভাবে ওভার-ইসনিউরড।
মহামারির শুরুতেই ২০২০ সালের মার্চে দ্রুত সিইআরবি ঘোষণা করা হয় এবং শাটডাউনের কারণে যেসব কানাডিয়ানের আয় কমে যায় তাদেরকে মাসিক ২ হাজার ডলার করে দেওয়া হয়। এর পরপরই সিইডব্লিউএসের আওতায় কোম্পানিগুলোকে তাদের কর্মীদের ধরে রাখার সুযোগ করে দিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর্মীদের মজুরিতে ৭৫ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়া হয়। কিন্তু যতক্ষণে এই সুবিধা দেওয়া হয় ততক্ষণে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলেছে।
মজুরিতে ভর্তুকি দেওয়ার কর্মসূচিকে ব্যর্থ বলে উল্লেখ করেছেন অনেকে। তিনি বলেন, মহামারি সংক্রান্ত কারণ ছাড়াও যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যেতো তারাও মজুরিতে ভুর্তকি পেয়ে কৃত্রিমভাবে টিকে ছিল। এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো মুনাফায় ফেরার অবস্থায় নেই।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার উপাত্ত অনুযায়ী, ২০২০ সালের এপ্রিলে বন্ধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘটনা দ্রুত বেড়ে যায়। কিন্তু এর পরপরই সংখ্যাটি দ্রুত কমে আসে। মাসিক বন্ধের সংখ্যা মহামারি পূর্ববর্তী সময়ের চেয়েও কমে আসে। ২০২০ সালের আগস্টে বন্ধ হয় প্রায় ৩১ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বন্ধ হয় ৪০ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।