নতুন এক সমীক্ষা অনুযায়ী, গত মাসে কানাডায় হেইট ক্রাইম ২৭ শতাংশ বেড়েছে। এ অবস্থায় হেইট ক্রাইমের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন কানাডিয়ান রেস রিলেশন্স ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ হাশিম। সেই সঙ্গে ভুক্তভোগীদের প্রতি ফেডারেল সরকারের সহায়তারও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
মোহাম্মদ হাশিম বলেন, অনলাইনসহ ঘৃণা থেকে উৎসারিত অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে এর বিস্তার হতেই থাকবে। অনলাইনে ঘৃণা এতোটাই ব্যাপক যে, এটা স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তারা তাদের আচরণ বদলে ফেলছেন। সোশ্যাল মিডিয়ার কোনো কমেন্ট তারা পড়ছেন না। সত্যি কথা বলতে, হেইট ক্রাইম দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে। নিরসনের ব্যবস্থা না নিলে এটা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যাবে যাকে আমরা স্বাভাবিক হিসেবেই ধরে নেবো। কারণ, পরিবেশটা আমরা খতিয়ে দেখার বাইরে ছেড়ে দিয়েছি।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা ২০২১ সালে হেইট ক্রাইমের নাটকীয় বৃদ্ধির পরিসংখ্যান দিয়েছে। তাদের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর পুলিশকে জানানো হেইট ক্রাইমের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৩ হাজার ৩৬০টিতে। ২০২০ সালে যেখানে সংখ্যাটি ছিল ২ হাজার ৬৪৬টি। অর্থাৎ, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে এ ধরনের ঘটনা বেড়েছে ৩৬ শতাংশ। পুলিশের তালিকাভুক্ত হেইট ক্রাইম ২০১৯ সালের তুলনায় বেড়েছে ৭২ শতাংশ।
অন্টারিওর লন্ডনের গত বছরের জুনে রাস্তায় হাঁটতে বেরোনো এক মুসলিম পরিবারের চারজনকে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। ইসলামোফোবিয়া থেকেই ট্র্রাকচালক অপরাধটি করেছে বলে পুলিশের ধারণা।
জননিরাপত্তা মন্ত্রী মার্কো মেন্ডিসিনো বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ্প্রান্তি মানুষজন যে ঘৃণার শিকার হচ্ছেন সংখ্যাটি তার আশঙ্কাজনক ও উদ্বেগজনক বৃদ্ধির প্রমাণ। নতুন আইনের মাধ্যমে বিভিন্ন ফ্রন্টে ফেডারেল সরকার এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে। প্রত্যেক কানাডিয়ান তাদের কমিউনিটিতে নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামবো না।
রেস রিলেশন্স ফাউন্ডেশন তাদের এক প্রতিবেদনে হেইট ক্রাইমের শিকার ব্যক্তিদের আরও ফেডারেল সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। অপরাধ হিসেবে বিবেচিত না হওয়ায় এদের অনেকেই আর্থিক ক্ষতিপূরণ পান না।
সেন্টার ফর ইসরায়েল অ্যান্ড জুইশ অ্যাফেয়ার্সের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শিমন কফলার ফোজেল বলেন, ইহুদি সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে হেইট ক্রাইমের ঘটনা ২০২০ সালের পর ৪৭ শতাংশ বেড়েছে। পরিসংখ্যানগতভাবে কানাডিয়ান ইহুদিরা কানাডার অন্য যেকোনো সম্প্রদায়ের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি হেইট ক্রাইমের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়ে থাকেন।