প্রতিটি সিগারেটের গায়েই সতর্কবার্তা লেখা প্রথম দেশ হতে যাচ্ছে কানাডা। কানাডায় তামাকজাত পণ্যের মোড়কে সচিত্র সতর্কীকরণের যে বাধ্যবাধকতা তার ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত। দুই দশক আগে এটি চালু হয় এবং পরবর্তীতে বিশ^ব্যাপী তা প্রবণতা হয়ে দাঁড়ায়।
অ্যাডিকশন মন্ত্রী ক্যারোলিন বেনেট শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই বার্তার নতুনত্ব হারিয়ে যাওয়ার একটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে এবং সেটি আমাদের বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন। একইসঙ্গে এর প্রভাব হারিয়ে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ আছে আমাদের মধ্যে। প্রতিটি তামাকজাত পণ্যে স্বাস্থ্য সতর্কতা এই বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া নিশ্চিত করবে। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে, যারা প্যাকেটের গায়ে মুদ্রিত তথ্য পাশ কাটিয়ে সিগারেট নিতে পারে।
এই পরিবর্তন নিয়ে পরামর্শ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। আগামী বছরের মাঝামাঝি নাগাদ এই পরিবর্তন কার্যকর হবে বলে সরকার আশা করছে। সিগারেটে মুদ্রিত বার্তা পরিবর্তনের সম্ভাব্য থাকলেও বেনেট বলেন, আমাদের প্রস্তাব হচ্ছে-‘পয়জন ইন এভরি পাফ’।
ধুমপানে স্বাস্থ্যের যে ক্ষতি তার একটি লম্বা ওতালিকা সিগারেটের প্যাকেটে থাকবে বলে জানান বেনেট। পাকস্থলির ক্যান্সার, ডায়াবেটিস ও পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিজ এর মধ্যে অন্যতম।
কানাডিয়ান ক্যান্সার সোসাইটির নীতি বিশ্লেষক রব কানিংহাম বলেন, সিগারেটের গায়ে প্রত্যক্ষভাবে মুদ্রিত সতর্কবার্তা আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় হবে বলে আমার আশা। যেমনটা হয়েছে প্যাকেটের গায়ে সতর্কবার্তা লেখা। বিশে^র সামনে এটা উদাহরণ সৃষ্টি করতে যাচ্ছে। আর কোনো দেশই সিগারেটের গায়ে এ ধরণের সতর্কবার্তা মুদ্রিত করেনি। আশা করি, এই সতর্কবার্তা সত্যিকারের ব্যবধান গড়ে দেবে। এই সতর্কবার্তা আপনি চাইলেই উপেক্ষা করতে পারবেন না। প্রতিটি শলাকার সঙ্গে প্রত্যেক মানুষের কাছেই তা পৌঁছাবে।
উদ্যোগটির প্রশংসা করেছেন ইউনিভার্সিটি অব ওয়াটারলুর অধ্যাপক এবং ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো কন্ট্রোল পলিসি ইভ্যালুয়েশন প্রজেক্টের চিফ ইনভেস্টিগেটর জিওফ্রি ফং। তিনি বলেন, এটা সত্যিই শক্তিশালী একটা পদক্ষেপ, যা স্বাস্থ্য সতর্কতার প্রভাবকে আরও দৃঢ় করবে।
কানাডায় ধুমপায়ীর হার কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে কমছে। স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার সাম্প্রতিক উপাত্ত বলছে, কানাডার ১০ শতাংশ মানুষ নিয়মিত ধুমপান করে থাকেন। ২০৩৫ সালের মধ্যে এ হার অর্ধেকে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। ২০ বছর ও তার বেশি বয়সী প্রায় ১১ শতাংশ কানাডিয়ান ধুমপান করে থাকেন। ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের মধ্যে এ হার মাত্র ৪ শতাংশ।