
কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হওয়ার পর কানাডার রেস্তোরাঁ ও বারে বিক্রি প্রথমবারের মতো মহামারি-পূর্ব অবস্থাকে ছাড়িয়ে। স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে। তবে মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকায় অনেক রেস্তোরাঁ মালিককেই কোনোরকমে ব্যবসা চালিয়ে নিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে রেস্টুরেন্টস কানাডা।
মঙ্গলবার প্রকাশিত উপাত্ত বলছে, মার্চে কানাডিয়ান রেস্তোরাঁ ও বারের বিক্রি আগের মাসের তুলনায় ৬ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ৬৮০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। তবে ২০২১ সালের মার্চের তুলনায় বিক্রি বেড়েছে ৩৫ শতাংশ ২০২০ সালের মার্চের তুলনায় ৬২ দশমিক ৯ শতাংশ। আর কোভিড-১৯ মহামারির আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালের মার্চের তুলনায় চলতি বছরের মার্চে বিক্রি বেড়েছে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ।
দেশজুড়ে আরোপিত কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল করার ফলে রেস্তোরাঁ ও বারে মার্চের এই বিক্রয় প্রবৃদ্ধি। ডলারের হিসাবে সবচেয়ে বেশি বিক্রি বেড়েছে অন্টারিওতে। তবে শতাংশের হিসেবে বিক্রি বেড়েছে সবচেয়ে বেশি ম্যানিটোবায়।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার তথ্য অনুযায়ী, বিক্রি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশে মূল্যস্ফীতি ও খাবারের দামও বেড়েছে। ২০২২ সালের মার্চে রেস্তোরাঁর খাবারের দাম ২০২১ সালের মার্চের তুলনায় ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। একইভাবে লাইসেন্সধারী বারে অ্যালকোহলজাতীয় পানীয় বিক্রি বেড়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
রেস্টুরেন্টস কানাডার জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ক্রিস এলিয়ট বলেন, বিক্রি বাড়লেও রেস্তোরাঁগুলোকে উচ্চ পরিচালন ব্যয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। ৫ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত রেস্টুরেন্টস কানাডা যে জরিপ চালিয়েছে তাতে প্রতি ১০ জন রেস্তোরাঁ মালিকের মধ্যে ছয়জনই কোনো রকমে কার্যক্রম চালিয়ে রাখার কথা জানিয়েছেন। অধিক সংখ্যক কানাডিয়ান এই বসন্তে বাইরে খাবার খাওয়া শুরু করলেও মূল্যস্ফীতির চাপের কারণে তা কমে আসতে পারে।
রেস্টুরেন্টস কানাডার তথ্য অনুযায়ী, কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হওয়ার আগে কানাডার খাদ্য সেবা খাত ছিল ৯ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের শিল্প, যেখানে প্রত্যক্ষভাবে কর্মরত ছিলেন ১২ লাখ মানুষ। দুই বছর ধরে মহামারি এবং বিভিন্ন পর্যায়ে জনস্বাস্থ্য বিধিনিষেধের কারণে সারাদেশেই রেস্তোরাঁগুলোতে বসে খাওয়া কমে যায়। এর ফলে বিপুল সংখ্যক মানুষ কাজ হারানোর পাশাপাশি রেস্তোরাঁগুলো বিক্রি কমে যায় কয়েক বিলিয়ন ডলারের।
গত মাসে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রেস্টুরেন্টস কানাডা জানায়, খাদ্য সেবা খাতের ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তার জন্য ঋণ মওকুফ ও পরিশোধের সময় বাড়ানোর আহ্বান অব্যাহত রাখা হচ্ছে।