পেনশনের ওপর কর আদায়ের মাধ্যমে কানাডায় পালিয়ে আসা কাবুলে কানাডিয়ান দূতাবাসের সাবেক কর্মীদের স্বাগত জানিয়েছে কানাডিয়ান রেভিনিউ এজেন্সি (সিআরএ)। যদিও এই অর্থের ওপর কোনো অধিকার নেই তাদের। কারণ, এ অর্থ কানাডা থেকে উপার্জিত হয়নি বা কানাডায় তৈরিও হয়নি। কর্মীরা ছিলেন আফগান নাগরিক এবং আফগানিস্তানে করও প্রদান করেছেন। অর্থাৎ সিআরএ তাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে।
শুধু তাই নয়, গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা (জিএসি) যখন আফগানদের এ অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সিআরএ তখন আরও চাইছে। এবং অর্থের পরিমাণটা কম নয়।
জুমে আফগান দূতাবাসের অন্তত চারজেনের সঙ্গে কথা হয় দ্য কানাডিয়ান প্রেসের। প্রত্যেকেই সম্প্রতি বন্ধ হয়ে যাওয়া দূতাবাসের রাজনৈতিক শাখায় দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তাদের আয় থেকে ৪ লাখ ডলার কেটে রাখা হয়েছে। কর্মীর পদভেদে সিআরএ ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার ডলার নিয়ে নিয়েছে। তাদের অনেককে কাবুলে কানাডিয়ান দূতাবাস স্থানীয়ভাবে ২০০৩ সাল থেকে নিয়োগ দিয়েছিল। তাদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কানাডার প্রতি আমরা অকৃতজ্ঞ এটা বলবো না। কারণ, নিরাপত্তা ও কল্যাণের জন্য আমরা তাদের কাছে ঋণী। কিন্তু সিআরএ একটা ভুল করেছে।
এ ঘটনায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার লিবারেল এমপি সুখ ঢালিওয়ালের নেতৃত্বাধীন আফগানিস্তান বিষয়ক সংসদীয় কমিটিতে একটি চিঠিও পাঠানো হয়েছিল। তাতে উল্লেখ করা হয়, সেবা ও জীবনের ঝুঁকি নেওয়ার কারণে আমাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে কানাডিয়ান সরকারের জন্য কাজ করা আমাদের পরিবারের সদস্যরা আফগানিস্তানে কঠিন পরিবেশের মধ্যে রয়েছেন। আমাদের অবস্থা অনুধাবনের জন্য বিশেষ কমিটির সম্মানিত সদস্যদের আমরা আফগানিস্তান সফরের আহ্বান জানাচ্ছি। কানাডিয়ান সরকারের কাছে কোনো ধরনের করের দায় না থাকার পরও আপনারা একে সঠিক মনে করেন কী? আমাদের মনে হয়, কণ্ঠবিহীন নবাগ হওয়ায় জেএসি ও সিআরএ
আমাদের থেকে সুবিধা নিয়েছে।
কানাডায় নতুন হওয়ায় ও এই অন্যায় কীভাবে মোকাবেলা করতে হয় সে সম্পর্কে ধারণা না থাকায় সহায়তার একমাত্র স্থল হিসেবে আপনাদের শরনাপন্ন হয়েছি। মনে রাখবেন, এই মানুষগুলোর সবাই কানাডাকে সহায়তা করতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন এবং ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। কমিটির সম্মানিত সদস্যদের আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, আমরা ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছি, আমাদের সারাজীবনের অর্জন হারিয়েছি এবং আফগানিস্তানে আমাদের ব্যাংক হিসাবে প্রবেশাধিকার নেই। এই অবস্থায় আমাদের প্রতি সহমর্মিতা দেখানোর পরিবর্তে জিএসি এবং সিআরএ আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছ এবং ভুতাপেক্ষ কর দাবি করছে।