
সুদের হার বাড়ার আগেই বাড়ি কিনতে মরিয়া বিনিয়োগকারী ও প্রথমবারের মতো ক্রেতারা। এতে করে সামনের মাসগুলোতে কানাডায় বাড়ির দাম আবারও বাড়তে যাচ্ছে। যদিও বাড়ির দাম হঠাৎ পড়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে ব্যাংক অব কানাডা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর পল বিউড্রি মঙ্গলবার সম্ভাব্য ক্রেতাদের বাড়ি কেনার এখন সবচেয়ে ভালো সময় কিনা তা বিবেচনা করার আহ্বান জানান। কিছু শহরের আবাসন বাজারে সৃষ্ট বুদবুদ ও বিনিয়োগকারীদের নতুন করে তৎপরতার দিকে ইঙ্গিত করেন তিনি। বিউড্রি বলেন, এই অবস্থা বাজারকে সংশোধনের সামনে ফেলে দিতে পারে।
বর্তমানে সুদের হার রয়েছে দশমিক ২৫ শতাংশ এবং এ হার রেকর্ড নি¤œ। তবে ২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে সুদের হার বাড়তে পারে বলে গত মাসে বার্তা দিয়েছে ব্যাংক অব কানাডা। এর ফলে বাড়ি কেনার আরেকটি জোয়ার শুরু হয়ে গেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সিআইবিসি ক্যাপিটাল মার্কেটসের উপপ্রধান অর্থনীতিবিদ বেঞ্জামিন ট্যাল বলেন, সুদের হার বাড়া শুরু হলে বিনিয়োগকারীসহ লোকজন বাজারে নেমে পড়বেন। ফলে আগামী কয়েক মাসে কার্যক্রমে অন্যরকম গতি দেখা যাবে।
কানাডায় বাড়ির দাম গত মার্চে রেকর্ড ৩১ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এবার নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে দাম। যদিও অক্টোবরে বাড়ির গড় মূল্য মার্চের নিচেই আছে। ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা ফিচের মতে, টরন্টোর বাড়ির দাম ৩২ শতাংশ বেশি রয়েছে। আর ভ্যানকুভারে বেশি রয়েছে ২৩ শতাংশ। মুডি’স অ্যানালিটিকসও ভ্যানকুভারে বাড়ির দাম ২৩ শতাংশ , টরন্টোতে ৪০ শতাংশ ও হ্যামিল্টনে ৭৩ শতাংশ বেশি বলে জানিয়েছে।
কানাডার সর্ববৃহৎ শহর টরন্টোতে অক্টোবরে বাড়ির গড় দাম দাঁড়ায় ৯ লাখ ৪৭ হাজার ৪৯৩ ডলার, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ১৯ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। এছাড়া ডিটাচড হোমের গড় দাম পৌঁছেছে ১৫ লাখ ডলারে।
লাগামহীন আবাসন বাজার নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। যদিও সমালোচকরা বলছেন, ২০১৫ সালে ট্রুডো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশব্যাপী বাড়ির দাম বেড়েছে ৭৭ শতাংশ।
বাড়ি কিনতে চান এমন গ্রাহকদের নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে বলে জানান টরন্টোর মর্টগেজ ব্রোকার রন বাটলার। তিনি বলেন, আক্ষরিক অর্থেই প্রতি ঘণ্টায় আমরা গ্রাহকদের বাড়ি কেনার আশা ছেড়ে দিতে দেখছি। তারা বলছেন, বাড়ির দাম সর্বকালের সর্বোচ্চে পৌঁছাবে। এখনই আমাকে বাড়িটি কিনে ফেলতে হবে। টরন্টোর এক ভাড়াটের সঙ্গে আমি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি, যিনি বাড়ির দাম কমার অপেক্ষায় ছিলেন, যাতে করে একটি বাড়ি তিনি কিনতে পারেন। কিন্তু ভবিষ্যতে আর কেনা হবে না এমন শঙ্কা থেকে তিনি এক ঘণ্টার দূরত্বে হ্যামিল্টনের পশ্চিমে একটি বাড়ি কিনছেন তিনি।