দক্ষিণপূর্ব এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে কম্বোডিয়া সফর সমাপ্ত করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সফরকালে এই অঞ্চলের অবিস্ফোরিত স্থলমাইন ও ক্লাস্টার বোমা অপসারণে সহায়তায় প্রায় ১০ লাখ ডলার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে ৯ লাখ ৯০ হাজার ডলারের এই ঘোষণা দেন তিনি। অবিস্ফোরিত স্থলমাইন অপসারণে কম্বোয়িা ও লাওসের তৃণমূল ও সরকারি পর্যায়ে গৃহীত প্রকল্পকে সহায়তা করবে এ তহবিল। ট্রুডো বলেন, ভূমি থেকে মাইনগুলো অপসারিত হলে জনগণ নিরাপদ হবে ও শিশুরা খেলতে পারবে। পাশাপাশি এই জমি কৃষি ও উন্নয়নে ব্যবহার করা যাবে।
এই ধরনের অস্ত্র ব্যবহার না করতে এই অঞ্চলের দেশগুলোকে চাপ দিয়ে আসছে কানাডা। সেই সঙ্গে দশকের পর দশক ধরে চলে আসা এ সমস্যার সমাধানে তহবিলের জোগান দিচ্ছে। ১৯৯৭ সালের অটোয়া চুক্তিতে মানববিধ্বংসী মাইন উৎপাদন নিষিদ্ধের কথা বলা হলেও সব দেশ তাতে স্বাক্ষর করেনি।
কানাডার প্রতিশ্রুতি এই অর্থ প্রথমেই যাবে লাওসের জাতীয় মাইন অপসারণ দল এবং কম্বোডিয়ান সেল্ফ হেল্প ডিমাইনিংয়ের মতো তৃণমূল গ্রুপের সহায়তায়। এই গ্রুপকে সহায়তা করছেন ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় মার্কিন সেনাবাহিনীতে কর্মরত বিল মোর্স। তিনি বলেন, এখানে প্রত্যেকেই যখন তহবিল ছোট করছে, সে সময় তহবিল অব্যাহত রাখার ব্যাপারে ট্রুডোর এই প্রতিশ্রুতি বড় পদক্ষেপ। স্থানীয় সংস্থাগুলোর হাতে পর্যাপ্ত সম্পদ থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যেই কম্বোডিয়া মাইনমুক্ত হবে।
এছাড়া কয়েক দশক আগে মাটিতে পুতে রাখা ক্লাস্টার বোমায় কৃষকরা এখনো পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া যানবাহন ও ট্যাংক উড়িয়ে দিতে যেসব স্থলমাবইন পোতা হয়েছিল, সেগুলো অবিস্ফোরিত অবস্থায় থাকে, যতক্ষণ পর্যন্ত না ভারী কিছু এর ওপর দিয়ে যায়।
মোর্স বলেন, কম্বোডিয়ায় স্থলমাইন বিস্ফোরণে প্রতি বছর প্রায় ৫০ জন নিহত হয়ে থাকেন। নব্বইয়ের দশকে যেখানে হাজারো মানুষের মৃত্যু হতো। স্থলমাইনে কানাডায় যদি প্রতি বছর ৫০ জন করে মানুষ মারা যেতো তাহলে হয়তো কানাডিয়ান সশস্ত্র বাহিনীর প্রাপ্ত সমস্ত অর্থ এগুলো পরিষ্কারের জন্য ঢালা হতো।
বিশ্বব্যাপী সহিংসতায় এখনো স্থলমাইনের ব্যবহার হচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধেও হচ্ছে এবং কম্বোডিয়ান গ্রুপগুলো ইউক্রেনের জনগণকে প্রশিক্ষিত করছে। কীভাবে দেশগুলো একত্রিত হতে পারে এটা তার সত্যিকারের উদাহরণ এবং এ থেকে তা শেখার আছে বলে মনে করেন জাস্টিন ট্রুডো।