
এনআরবি টেলিভিশনের কানাডা জার্নালের পক্ষ থেকে গত ৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় বিজয়া পুনর্মিলনী ২০২২ আয়োজন করা হয়। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও লেখক ও গবেষক সুব্রত কুমার দাসের উদ্যোগ ও পরিকল্পনায় টেলিভিশনে প্রচারের জন্যে কানাডা জার্নাল আয়োজন করেছিল শারদ-আনন্দ। শারদ-আনন্দ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী প্রায় দেড় শত শিল্পী, গুণীজন এবং স্পন্সরদের নিয়ে এনআরবি টেলিভিশন আয়োজন করে আনন্দমূখর বিজয়া পুনর্মিলনী। ১৬ ডোম এভিনিউতে অবস্থিত বাংলাদেশ কানাডা হিন্দু মন্দিরে আয়োজিত বিজয়া পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের সহযোগিতায় ছিলেন গৌরী দাস, অমল দেব, শিপ্রা ঘোষ, নীলিমা দত্ত, অসীম ভৌমিক, পৌনমী দেব এবং বাদল ঘোষ। পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনায় ছিলেন লেখক ও সংস্কৃতিকর্মী তাসমিনা খান।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকল শিল্পীকে মঞ্চে ডেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান সুব্রত কুমার দাস এবং এনআরবি টিভির সিইও ও বাংলামেইল পত্রিকার সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিন্টু। শহিদুল ইসলাম মিন্টু স্বাগত বক্তব্যে উপস্থিত অতিথিদের উদ্দেশে বলেন, এই আয়োজনটি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্যে। আমাদের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে আপনারা শারদ-আনন্দ আয়োজনে অংশ নিয়েছেন এবং সহযোগিতা করেছেন। আর তাই শারদ-আনন্দ প্রশংসিত হয়েছে বিভিন্ন মহলে। আপনাদের ভালোবাসা নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই। সবসময় এনআরবি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ।
শারদ আনন্দ আয়োজনের দুই প্রধান ব্যক্তিত্ব, শহিদুল ইসলাম মিন্টু এবং সুব্রত কুমার দাসকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান লেখক ননীগোপাল দেবনাথ। রসায়নবিদ অর্চনা সাহা তাঁদেরকে উত্তরীয় পরিয়ে অভিনন্দিত করেন।
বিজয়া পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট শিল্পী সোনালী রায় এবং ড. মমতাজ মমতা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। তরুণ শিল্পী শুভাশিস চৌধুরীও পরিবেশন করেন একটি সঙ্গীত। তাদের সাথে তবলায় সহযোগিতা করেন বরেণ্য তবলাবাদক অঞ্জন ঘোষ। ভারতীয় ধ্রুপদী নৃত্যকলার প্রশিক্ষক এবং বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী অনুপমা সাহা পরিবেশন করেন একটি অডিসি নৃত্য। সুকুমার রায়ের বিখ্যাত মজার কবিতা ‘কুমড়ো পটাশ’ উচ্চারণ করে শোনায় ক্রিয়েটিভ বাডস নামের সংগঠনের তিন ক্ষুদে শিল্পী তিলোত্তমা রায়, উর্বশী রায়, এবং রিয়োনা ব্যানার্জী।
বিজয়া পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের সমাপন হয় পুজোর ঐতিহ্যকে মাথায় রেখে প্রস্তুত নৈশভোজ দিয়ে।
জানিয়ে রাখা যেতে পারে যে এ বছর অন্যস্বর টরন্টো, আনন্দী, উদিচি শিল্পীগোষ্ঠী অব ক্যানাডা, টরন্টো বেঙ্গলি ড্রামা গ্রুপ, ধৈবত, নৃত্যকলা কেন্দ্র, বাচনিক, বাবা লোকনাথ আশ্রম, বাংলাদেশ রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী সংস্থা ক্যানাডা, বিষ্ণু প্রিয়া, সঙ্গীত প্রতিষ্ঠা মিউজিক একাডেমী, সাথীঃ দ্যা মিউজিকাল ভয়জারস, সুর বন্ধনী, এবং সোসাইটি অফ বেঙ্গলি ইঞ্জিনিয়ারস, ক্যানাডা এসবিইসি-র শিল্পীরা অংশ নেন। ঢাকের বাদন পরিবেশন করেন অনিন্দ্য দাস, এবং সুবর্ণ চৌধুরী।
এ ছাড়াও যে বিশিষ্টজনেরা যুক্ত হয়েছিলেন তারা হলেন, সর্বজন শ্রদ্ধেয় পুরোহিত শ্যামল ভট্টাচার্য, সমরেন্দ্র ঘোষ, ড. সুশীতল সিংহ চৌধুরী, বিশ্বজিত মিত্র এবং শ্রীজিৎ চৌধুরী।
এ বছর শারদ আনন্দ আয়োজনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিলেন বাঙালি কমিউনিটির বিপুল সংখ্যক বিশিষ্ট জন। সেই বিশিষ্ট জনেরা হলেন ব্যারিস্টার চয়নিকা দত্ত, চিত্ত দাস, দেবিকা ভট্টাচার্য, নিতু দত্ত, রাজীব চন্দ্র, প্রনবেশ পোদ্দার, সাধন দেব, সুমন চক্রবর্তী ও বব সরকার, এবং ব্যারিস্টার সূর্য চক্রবর্তী।
উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ২০১৭ সাল থেকে এনআরবি টেলিভিশন দুর্গাপুজো উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করে চলেছে। ২০১৯ সালে এ আয়োজনের শিরোনাম ধার্য করা হয়েছিল ‘পূজা স্পেশাল’। ২০২০ সালে করোনার সময়ে, শারদ উৎসবের চেতনা নামে আয়োজনটি সম্পন্ন হয়। ২০২০ এবং ২০২১ সালে আয়োজনটি ছিল ভারচুয়াল । কারণ চারপাশের প্রিয়জনেরা করোনার দ্বারা আক্রান্ত ছিলেন। ২০২১ সাল থেকে আয়োজনটির নামকরন করা হয় শারদ আনন্দ। আরও উল্লেখ করা যেতে পারে যে, শারদ আনন্দ এ বছর এনআরবি টেলিভিশনে দুর্গাপুজোর ঠিক আগে আগে প্রচার করা হয়েছিল। ২৪ সেপ্টেম্বর প্রচার করা হয় মহালয়া এবং সেদিন অন্টারিওর বিভিন্ন মন্দিরের প্রতিনিধিরা কথা বলেন। ২৯ এবং ৩০ সেপ্টেম্বর টরন্টোর বিপুল সংখ্যক সংগঠন যুক্ত হয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এই আয়োজনটি বিভিন্নমহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়।