আনুষ্ঠানিক নাম পেল কানাডার নতুন দুই আর্কটিক ও অফশোর টহল জাহাজ। দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধে দেশের দুই নৌবাহিনীর দুই নায়কের গল্প ধরে রাখতেই রোববার এই নামকরণ করা হয়।
হ্যালিফ্যাক্স শিপইয়ার্ডে এইচএমসিএস মার্গারেট ব্রুক ও এইচএমসিএস ম্যাক্স বার্নেসের বাউয়ের ওপর নোভা স্কশিয়া ওয়াইনের বোতল ভেঙে এই নামের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। নোভা স্কশিয়ার প্রিমিয়ার টিম হিউস্টন উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, কানাডিয়ানদের জন্য নোভা স্কশিয়ানরা এগুলো নির্মাণ করেছে।
জাহাজের নামকরণের এই রেওয়াজ শতাব্দি ধরে চলে আসছে এবং ধারণা করা হয়, জাহাজ ও ক্রুদের জন্য এটা সৌভাগ্য বয়ে আনবে এবং তাদের যাত্রা নিরাপদ হবে।
দুটি জাহাজই ছয়টি আর্কডঁশ ও অফশোর টহল জাহাজের অংশ এবং জাতীয় জাহাজ নির্মাণ কৌশলের অধীনে এগুলো রয়্যাল কানাডিয়ান নেভীর কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। বরফ ভেঙে চলতে সক্ষম জাহাজ দুটি দৈর্ঘ্য ১০০ মিটারের বেশি।
হ্যালিফ্যাক্স শিপবিল্ডিংয়ের প্রেসিডেন্ট কেভিন মুনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি ও সরবরাহ ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলতার মধ্যেও আরভিংয়ের মালিকানাধীন ইয়ার্ডের ক্রুরা কাজ চালিয়ে গেছেন। প্রথম আর্কটিক অ্যান্ড অফশোর পেট্রোল শিপ ঞ্যারি ডিউল্ফের চেয়ে ৩৭ শতাংশ কম সময়ে মার্গারেট ব্রুকের কাজ শেষ করে গত জুলাইয়ে আমরা তা সরবরাহ করেছি। ২০২৫ সালের মধ্যে কানাডিয়ান নেভীকে নতুন একটি আর্কটিক অ্যান্ড অফশোর পেট্রোল শিপ আমরা সরবরাহ করব। এরপর কোস্ট গার্ডকেও দুটি জাহাজ সরবরাহ করব।
পাবলিক সার্ভিস ও প্রকিউরমেন্ট বিষয়ক ফেডারেল মন্ত্রী ফিলোমেনা ট্যাসি তার শিপইয়ার্ড পরিদর্শনকে রোমাঞ্চকর বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমি যখন নামি এবং জাহাজগুলোর সামনে দাঁড়াই তখন আমার মধ্যে অন্যরকম অনুভুতি কাজ করছিল, এই ভেবে যে কানাডিয়ানদের হাতে এগুলো নির্মিত হয়েছে। এগুলো সরবরাহের ক্ষেত্রে যে উদ্ভাবন, মনোযোগ ও প্রত্যয় সত্যিই তা বিস্ময়কর।
মার্গারেট ব্রুক ১৯৪২ সালে নার্সিং সিস্টার ডায়েটিশিয়ান হিসেবে নৌবাহিনীতে যোগ দেন এবং বাহিনীতে তার ২০ বছরের চাকরিতে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হিসেবে পদন্নতি পান। জার্মান সাবমেরিন ১৯৪২ সালের অক্টোবরে নিউফাউন্ডল্যান্ড উপকূলে ফেরি এসএস কারিবো ডুবিয়ে দেয়। সহকর্মী ও বন্ধুর জীবনরক্ষায় সম্ভাব্য সব চেষ্টাই করেছিলেন মার্গারেট। দুই নারীই ডুডে যাওয়া লাইফবোটের রশি ধরে ছিলেন। ব্রুকের নায়কোচিত চেষ্টা সত্ত্বেও তার বন্ধু মারা যান। লেফট্যান্ট কমান্ডার ব্রুককে মেম্বার অব দ্য অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ অ্যাম্পায়র সম্মাননা দেওয়া হয়।
ম্যাক্স বার্নেস ১৯৪২ সালের আগস্টে ভারপ্রাপ্ত চিফ পেটি অফিসার ছিলেন এবং এইচএমসিএস আসিনিবোয়িনে ছিলেন। জার্মান সাবমেরিনের সঙ্গে ভয়াবহ যুদ্ধের সময় কুয়াশার মধ্যে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে শত্রু জাহাজ সেটি ডুবিয়ে দেয়।