গৃহহীণ তরুণদের সহায়তায় বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়িয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে ১২ কোটি ৫০ লাখ ডলারে উন্নীত করছে হোম ডিপো কানাডা ফাউন্ডেশন। টরন্টোর ইয়ুথ উইদাউট শেল্টার এবং দ্য অরেঞ্জ ডোর প্রোজেক্ট ট্রেড ওয়ার্ক্সের মতো কমিউনিটি অংশীদারদের মাধ্যমে সহায়তার এ অর্থ ব্যয় করা হবে। তরুণরা যাতে স্বাধীনভাবে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে সেজন্য এর সাহায্যে তাদের সহায়তা ও ব্যবসায় শিক্ষা দেওয়া হবে।
গৃহহীন তরুণদের ক্ষেত্রে তহবিলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, মহামারি সংকটের মধ্যেও সংকট তৈরি করেছে। প্রথমবারের মতো যারা গৃহহীনতার অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তাদের গড় বয়স ১৬ বছর। এদের ৪০ শতাংশ শুরুতে বন্ধুদের সঙ্গে থাকেন। কিন্তু ১২ শতাংশ থাকেন পার্ক বা অন্যান্য পাবলিক স্থানে। গৃহহীণ তরুণদের এক-তৃতীয়াংশ আবার এলজিবিটি, ২৮ শতাংশ প্রান্তিক ও ৩১ শতাংশ আদিবাসী।
গৃহহীণ প্রতি পাঁচজন কানাডিয়ানের মধ্যে একজন তরুণ। কীভাবে তৈরি হচ্ছে এ পরিস্থিতির? শারীরিক ও যৌন নিপীড়ন শিশুদের বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করছে। বাবা-মায়ের নির্যাতনও এ পথে ঠেলে দিচ্ছে তাদের। এলজিবিটি পরিচয় নিয়ে পরিবারের সঙ্গে বিরোধ এর আরেকটি কারণ। এই পরিচয়ের কারণে শিশুদের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে অথবা তারাই বাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছে।
মহামারি শুরু হওয়ার পর বিশ^ব্যাপী লকডাউন শুরু হওয়ায় গৃহহীণতার পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে পড়ে। নির্যাতনকারী বাবা-মা যদি সারাদিন কাজে থাকেন তাহলে কয়েক ঘণ্টার জন্য আপনি তাদের থেকে পালিয়ে থাকতে পারেন। স্কুলে ইন্টারনেট ও বিনামূল্যে দুপুরের খাবারের বন্দোবস্ত রয়েছে। তবে আপনি যদি দারিদ্রের মধ্যে থাকেন তাহলে এগুলোর প্রাপ্যতা সহজ নয়। মহামারির সময় কাজ ছিল না, স্কুলও ছিল না। সুতরাং পালানোরও কোনো সুযোগ ছিল না। কোভিডের সময় সমগ্র পরিবারই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
অনেকেই কাজ হারিয়ে ভাড়া পরিশোধ ও খাবার কেনার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেন। এর ফলে তাদের সন্তানরা ঝুঁকিতে পড়ে যায়। তাদের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা গ্র্যান্ডপ্যারেন্টদেরও কোভিডের কারণে হারায় অনেক শিশু।
ক্যালগেরির টেলিসের ইয়ুথ হাউজিং অ্যান্ড আউটরিচের প্রোগ্রাম ম্যানেজার অড্রে মার্টিন বলেন, মহামারির সময় পারিবারিক অবস্থা এমন অবস্থায় পৌঁছে যে, তরুণদের বাড়ি ছাড়া জরুরি হয়ে পড়ে। কারণ, বাড়ি আর তাদের জন্য নিরাপদ ছিল না। এটা একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ এবং বড় ধরনের পরিবর্তন, যা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে।