বড় দলগুলোর আক্রমণ বন্ধ করে জাতীয় নির্বাচনী প্রচারণাকালে কোন নেতা কখন, কিভাবে, কি বিতর্কে অংশ নেবেন সেটি নিয়ন্ত্রণে তৈরি হয়েছিল লিডার’স ডিবেটস কমিশনের। তবে বৃহস্পতিবারের ইংরেজি ভাষার বিতর্ককে ঘিরে স্বাধীন কমিশনটির সমাপ্তি চাইছেন সমালোচকদের অনেকে। তা সম্ভব না হলে এর কর্তৃত্বে বদলের দাবি তুলছেন তারা।
বৃহস্পতিবারের দুই ঘণ্টার আক্রমণাত্মক বিতর্কে নেতাদের নীতি ও আক্রমণ খ-ানোর মতো পর্যাপ্ত সময় না দেওয়ার অভিযোগে সমালোচনায় বিদ্ধ হচ্ছে কমিশন। সমালোচকদের মতে, সঞ্চালক সাচি কুর্ল ও প্রশ্নকর্তা সাংবাদিকদের বেশি সময় দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কুর্লের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক বিশেষ করে তার ভাষায় কুইবেকের বৈষম্যমূলক আইন নিয়ে প্রশ্ন করার অভিযোগও উঠেছে।
২০১৫ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পর জাস্টিন ট্রুডোর লিবারেল সরকার ডিবেট কমিশন গঠন করে। সেবারের নির্বাচনী প্রচারণায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার একাধিক টেলিভিশন চ্যানেলের কনসোর্টিয়াম আয়োজিত বিতর্কে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। আরো পাঁচটি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হলেও দর্শক টানতে পেরেছিল সামান্যই। বিতর্কে অংশ না নেওয়া নেতাদের বড় দলগুলো হুমকি দেওয়ায় কনসোর্টিয়াম বিতর্ক নিয়ে আগেও সমালোচনা উঠেছিল। গ্রিন পার্টি সুকৌশলে তাদের নেতাকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ এনেছিল।
এসবের পরিপ্রেক্ষিতেই সাবেক গভর্নর জেনারেল ডেভিড জনস্টনের নেতৃত্বে গঠিত হয় কমিশন। বৃহস্পতিবারের ইংরেজি ও বুধবারের ফরাসী ভাষায় বিতর্কে অংশগ্রহণের যে মানদ- কমিশনের তরফ থেকে নির্ধারণ করা হয় তাতে বাদ যান পিপল’স পার্টির নেতা ম্যাক্সিম বার্নিয়ের। কিন্তু বিতর্ক প্রযোজনার প্রায় পুরো দায়িত্বই দেওয়া হয় নেটওয়ার্ক কনসোর্টিয়ামকে। ইংরেজি ভাষার বিতর্কের জন্য গঠিত কনসোর্টিয়ামে অন্তর্ভুক্ত করা হয় সিবিসি নিউজ, সিটিভি নিউজ, এপিটিএন নিউজ ও গ্লোবাল নিউজকে।
ইংলিশ ব্রডকাস্ট কনসোর্টিয়ামের পক্ষ থেকে শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলা হয়, সঞ্চালক ও অংশগ্রহণকারী সাংবাদিক হিসেবে তাদেরকেই নির্বাচন করা হয়েছে লিডার’স ডিবেটস কমিশন থেকে যারা স্বাধীন।
১৯৭৭ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত নির্বাচনী বিতর্ক প্রযোজনা করেন সাবেক সিবিসি পার্লামেন্টারি ব্যুরো চিফ এলি অ্যালবিয়ন। তিনি বলেন, যারা এটাকে টিভি শোতে রূপান্তর করতে চাইছেন তাদের পরামর্শ কমিশন গ্রহণ করেছে বলে মনে হচ্ছে। নির্বাচনী বিতর্ক তেমনটা হওয়া উচিত নয়। নেতারা একে অপরকে দায়বদ্ধ করে ভোটারদের কাছে তাদের প্ল্যাটফরম ব্যাখ্যা করবেন। সাংবাদিকদের মধ্যস্থতার কোনো প্রয়োজন নেই এখানে। সাংবাদিকরা তো প্রতিদিনই নির্বাচনী প্রচারণায় নেতাদের প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করার সুযোগ পাচ্ছেন। বৃহস্পতিবারের বিতর্কে নেতারা গুরুত্বপূর্ণ কোনো ইস্যু নিয়ে আলোচনা অথবা তাদের নীতি নিয়ে কথা বলার সময় খুব কমই পেয়েছেন।