
টরন্টো পুলিশের এক কর্মকর্তা টিটিসির এক যাত্রীর গলা চেপে ধরার ভিডিও আদালতে প্রদর্শণ করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, কৃষ্ণাঙ্গ এক যুবক ঝামেলা পাকাচ্ছেন এবং ভাড়া পরিশোধ করছেন নাÑ এমন অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সাদা পোশাকের এক পুলিশ কর্মকর্তা ওই যুবকের গলা চেপে ধরেছেন।
যদিও ৪০ বছর বয়সী চেজ রিচার্ডস আদালতে বলেছেন, তিনি ভাড়া পরিশোধ করেছিলেন এবং কয়েকবার তার প্রমাণ দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু টিটিসি চালক তা বিশ^াস করেননি।
ঘটনাটি ঘটে ২০১৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর। ওই ঘটনায় ওল্ড সিটি হলে বৃহস্পতিবার সাক্ষ্য দিচ্ছিলেন রিচার্ডস। তিনি বলেন, পকেট থেকে ওয়ালেট বের করি এবং আমার কাছে যে পর্যাপ্ত অর্থ আছে সেটা প্রমাণ করার চেষ্টা করি। আমি যে প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছি না এবং ঝামেলাও পাকাচ্ছি না সেটা প্রমাণের আবারও আমার কার্ডটি ট্যাপ করি। চালক বলেন, তিনি আমাকে নিয়ে বাস চালাতে চান না। কারণ, আমার থেকে নাকি সিগারেটের গন্ধ বেরোচ্ছিল। আমি তাকে বলি, আমার গন্ধ আপনার কোনো ক্ষতি করবে না। আপনি আপনার কাজ করুন।
ক্রাউন অ্যাটর্নি রবার্ট শ্যালো রিচার্ডসের কাছে জানতে চান, আপনি এটাকে বর্ণবাদী আচরণ বলেছেন। কেন বলেছেন?
উত্তরে রিচার্ডস বলেন, কোনো শে^তাঙ্গ তরুণ যদি বাসে থাকতেন তাহলে এ ধরনের পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে হতো বলে আমি মনে করি না।
রিচার্ডসের বিরুদ্ধে দুব্যর্বহার ও ঝামেলা তৈরির অভযোগ আনা হয়েছে। তবে টরন্টো পুলিশের কর্মকর্তা ডিটেক্টিভ ক্রিস্টোফার হাচিংসের বিরুদ্ধে রিচার্ডসকে হয়রানি ও মাত্রাতিরিক্ত শক্তি অভিযোগেরও বিচার চলছে। আদালতে পুলিশের রেডিও বাজিয়ে শোনানো হয়। সেখানে একজন কর্মকর্তা বলছেন, টিটিসির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, একজন পুরুষ বাস থেকে নামতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন এবং চালককে বাস চালাতে দিচ্ছেন না। চালকের বাসে দাঁড়িয়ে ঝামেলা বাধাচ্ছেন।
এর পরপরই হাচিংস ও আরেকজন কর্মকর্তা সেখানে পৌঁছান। এই তিনজনের মধ্যে ২৫ সেকেন্ড বাক্য বিনিময় হয়। এরপর হাচিংসকে রিচার্ডসের গলা চেপে ধরতে দেখা যায়। এরপর তাকে বাসের আরেক পাশে ঠেলে নিয়ে একটি আসনের সঙ্গে চেপে ধরা হয়। বাসের পাটাতনে ফেলে দেওয়ার আগে অন্তত ৩০ সেকেন্ড রিচার্ডসের গলা চেপে ধরে রাখতে দেখা যায় হাচিংসকে। সেই সঙ্গে পা দিয়ে রিচার্ডসের শরীরে চেপে ধরতেও দেখা যায় ভিডিওতে।
আরেকটি ভিডিওতে পুলিশ কারে দুজন কর্মকর্তার সঙ্গে রিচার্ডসকে কথা বলতে দেখা যায়। একজন কর্মকর্তা বলেন, ঝামেলা পাকানোর কারণে তাকে আটক করা হয়েছে। জবাবে রিচার্ডস বলেন, ভাড়ার জন্য? আমি আমার প্রেস্টো কার্ড দেখিয়েছি। আমি বাসের ভাড়া শোধ করেছি। আমাকে আঘাত করা হয়েছে।
এ ঘটনায় টরন্টো পুলিশ থেকে হাচিংসকে সবেতন বরখাস্ত করা হয়েছে এবং নিজেকে তিনি নির্দোষ দাবি করেছেন। সেই রাতে হাচিংসের সঙ্গী ডিটেক্টিভ জেসন তানোইর বিরুদ্ধেও রিচার্ডকে নিগৃহীত করার অভিযোগ আনা হয়েছে।