
কারারক্ষীর প্রহারেই মানসিক ভারসাম্যহীন কয়েদি সুলাইমান ফকিরির মৃত্যু হয়েছে বলে অন্টারিওর চিফ ফরেন্সিক প্যাথলজিস্ট ডা. মাইকেল পোলানেন জানিয়েছেন। মঙ্গলবার প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে ডা. পোলানেন বলেন, অন্টারিওর লিন্ডসেতে সেন্ট্রাল ইস্ট কারেকশনাল ফ্যাসিলিটিতে প্রহার, পিপার স্প্রে ও সেলে মুখ চেপে ধরার পর ২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর মারা যান সুলাইমান ফকিরি।
করোনার অফিস থেকে এর আগে বলা হয়েছে, ফকিরির মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। তবে ঠিক কি ঘটেছিল তা পুনরায় পরীক্ষা করেন পোলানেন। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেছেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান ও ময়নাতদন্তে ফকিরির শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন এটাই প্রমাণ করে যে তার নির্জন কক্ষে মারাত্মক ধস্তাধ্বস্তির ঘটনা ঘটেছিল। এসব আঘাত তার মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করেছে।
ফকিরি সিজোফ্রেনিয়ায় ভুগছিলেন এবং কারাগারে যে ১১ দিন ছিলেন সেই সময়টাতে রোগের লক্ষণগুলো খারাপের দিকে চলে গিয়েছিল। ৩০ বছর বয়সী ফকিরিকে সাহায্যের জন্য তাকে মনোরোগ চিকিৎসকের কাছে নেওয়ার দরকার ছিল। কিন্তু সেটা হয়নি।
ফকিরির পরিবার পাঁচ বছর ধরে যে প্রশ্নের উত্তর খুঁজছিল পোলানেনের উদ্ঘাটন থেকে তারা তার উত্তর পেয়ে গেছে। ফকিরির সঙ্গে কি ঘটেছিল তা নিয়ে এখন আর তাদের মনে কোনো সন্দেহ নেই।
ইউসুফ ফকিরি দ্য কানাডিয়ান প্রেসকে এ ব্যাপারে বলেন, আমার প্রয়াত ভাই ছিলেন সুন্দর একজন মানুষ। এটা সেই দিন যে দিন আমার সমস্ত যন্ত্রণা থেকে তাকে মুক্তি দিয়েছি। দিনটি বেদনার। একই সঙ্গে আশারও।
ফকিরির মৃত্যুর একাধিক কারণ খুঁজে পেয়েছেন পোলানেন। তিনি বলেন, ফকিরির হৃদপিন্ডটা বড় ছিল। ওই অবস্থায় কারারক্ষীর সঙ্গে মারাত্মক ধ্বস্তাধ্বস্তি তার মৃত্যুর অন্যতম কারণ। সিজোফ্রেনিয়ার মধ্যেই ২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর ফকিরিকে কারাগারে রিমান্ডের নেওয়া হয়।
অন্টারিও প্রভিন্সিয়াল পুলিশ ও কাওয়ার্থা লেকস পুলিশ উভয়েই এ ঘটনায় তাদের তদন্ত শেষ করেছে। তবে কোনো অভিযোগ গঠন করেনি। ফকিরির পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মামলাটি এখন অন্টারিও প্রভিন্সিয়াল পুলিশের কাছে হস্তান্তরের সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু অন্টারিও প্রভিন্সিয়াল পুলিশেল ওপর আমাদের বিন্দুমাত্র আস্থা নেই। আমার ভাইকে হত্যাকারী ওই কারারক্ষীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনা প্রয়োজন।
অন্টারিও প্রভিন্সিয়াল পুলিশেল মুখপাত্র কেরি শিমিট এ প্রসঙ্গে বলেছেন, প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।