কানাডা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করার দুই বছর পর ৮০ শতাংশ জনগণ ভ্যাকসিনের আওতায় এসেছে। অর্থাৎ, প্রায় ৯ কোটি ৫০ লাখ ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে। কিন্তুু সেটা অপচয় বাদ দিয়েই।
পাবলিক হেলথ এজেন্সি অব কানাডার তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফেডারেল সরকারের কাছে ফাইজার, মডার্না ও নোভাভ্যাক্সের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন মজুদ ছিল ১ কোটি ৮০ লাখ ডোজ, যার মেয়াদ শেষ হওয়ার পথে। এছাড়া অ্যাস্ট্রাজেনেকার কাছ থেকে কানাডার কেনা আরও ১ কোটি ৩৬ লাখ ডোজ ভ্যাকসিনের মেয়াদও শেষের পথে।
ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোর বায়োএথিক্স অ্যান্ড গ্লোবাল হেলথের অধ্যাপক কেরি বাউম্যান বলেন, ক্রয়াদেশ বেশি দেওয়ার কারণে যেকোনো মহামারিতেই ভ্যাকসিন অপচয়ের বিষয়টি স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু কানাডার এতো বিপুল পরিমাণ ভ্যাকসিন অপচয়ের বিষয়টি উদ্বেগের। এটা স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ভঙ্গুরতা নির্দেশ করে। উদ্বৃত্ত নিয়ে আপনার যদি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকে তাহলে অতিরিক্ত ক্রয় কারণসম্মত। এই ভ্যাকসিন ক্রয়ে প্রচুর কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। কিন্তু উপাত্ত বিনিময় ও তার দিকে চোখ রাখার ক্ষেত্রে কানাডার যে বড় ধরনের দুর্বলতা রয়েছে সেটাই প্রমাণ করছে এই অপচয়।
পাবলিক হেলথ এজেন্সি অব কানাডা বলছে, বৈশি^ক স্বল্প চাহিদা এবং তা বিতরণে চ্যালেঞ্জের কারণে ভ্যাকসিন প্রয়োগে প্রতিবন্ধকতা স্পষ্ট। অন্যান্য দেশও কোভিড-১৯ মহামারির সময় ভ্যাকসিন অপচয়ের বিষয়টি জানিয়েছে। মার্কিণ যুক্তরাষ্ট্রে ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে মে পর্যন্ত সময়ে ৮ কোটি ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন নষ্ট হয়েছে। আর ব্রিটেনে ২০২২ সালের মে পর্যন্ত অপচয় হয় প্রায় ৭০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন।কানাডার অডিটর জেনালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেডারেল সরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিপুল পরিমাণ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ক্রয় নিশ্চিত করতে পারলেও অপচয় সীমার মধ্যে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।
কারেণ হোগান তার প্রতিবেদনে বলেছেন, ভ্যাকসিন বিতরণ বিতরণ ও ব্যবহার সংক্রান্ত উপাত্তের দিকে নজর রাখার প্রযুক্তির সমস্যার পাশপাশি ফেডারেল ও প্রাদেশিক সরকারের মধ্যে উপাত্ত বিনিময়ের জটিলতার কারণে পাবলিক হেলথ এজেন্সি অব কানাডার কাছে বিপুল পরিমাণ ভ্যাকসিন মজুদ রয়ে গেছে। মে মাস পর্যন্ত জাতীয় মজুদাগারে সংরক্ষিত ছিল ৩ কোটি ২৫ লঅখ ভ্যাকসিন, যার মূল্য ১০০ কোটি ডলারের মতো। বছরের শেষ নাগাদ যেগুলোর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। সামনের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এসব ভ্যাকসিন প্রদান বা অনুদান না দেওয়ায় আরও বড় ধরনের অপচয় ঘটতে যাচ্ছে। কানাডা ও অন্যান্য দেশ তাদের উদ্বৃত্ত ভ্যাকসিন অনুদান হিসেবে দিতে চাইছে।