
কানাডায় মাঙ্কিপক্সের বিস্তার রোধে যেসব পুরুষের অন্য পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক রয়েছে তাদেরকে নিরাপদ যৌন চর্চা এবং পার্টনারের সংখ্যা কমিয়ে আানার আহ্বান জানানো হয়েছে। কানাডার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তেরেসা ট্যাম সম্প্রতি এ আহ্বান জানান। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এরইমধ্যে ভাইরাসটিকে স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
ডা. তেরেসা ট্যাম বলেন, কানাডায় এখন পর্যন্ত ৭৪৫ জনের মধ্যে মাঙ্কিপক্স সনাক্ত করা গেছে। আক্রান্তদের ৯৯ শতাংশই পুরুষ, যাদের বয়স গড়ে ৩৬ বছর। নারীদের মধ্যে আক্রান্তের হার ১ শতাংশেরও কম, যাদের বয়স ২০ বছরের নিচে। মাঙ্কিপক্স সেইসব পুরুষের মধ্যেই ছড়াচ্ছে, যাদের অন্য পুরুষের সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক রয়েছে। কেউ আক্রান্ত হলে গে ও বাইসেক্সুয়াল পুরুষদের ব্যাপারে জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এইচআইভি মহামারি থেকে শিক্ষা নেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ট্যাম বলেন, কানাডার জনস্বাস্থ্য বিভাগ যেসব পুরুষের অন্য পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক রয়েছে তাদের সহায়তার জন্য নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছে। রোগটি থেকে কীভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা যায়, সে ব্যাপারে তাদেরকে অবহিতকরণও নিশ্চিত করতে কাজ করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা হলে ফিরলে ফেডারেল ও প্রাদেশিক সরকার গুলোর বিশ^বিদ্যালয় ও কলেজের সঙ্গে কাজ করাও গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান ডা. তেরেসা ট্যাম।
মাঙ্কিপক্সের ফলে শরীরে র্যাশ দেখা যায়। সেই সঙ্গে জ¦র, সর্দিও হতে পারে। মাঙ্কিপক্স নির্মুল হওয়া স্মলপক্স ভাইরাসের কাছাকাছি গোত্রের। মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে স্মলপক্সের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতাও প্রমাণিত হয়েছে। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের স্মলপক্সের ভ্যাকসিন নেওয়ার সুপারিশ করেছে ন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কমিটি অন ইমিউনাইজেশন। ফেডারেল সরকার এখন পর্যন্ত প্রদেশ ও অঞ্চলগুলোতে ৭০ হাজার ডোজের বেশি ভ্যাকসিন পাঠিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২৭ হাজার ডোজ প্রয়োগ করা হয়েছে। কানাডার হাতে এই মুহূর্তে স্মলপক্সের ভ্যাকসিনের সরবরাহ সীমিত। কিন্তু প্রদেশগুলোর আরও ভ্যাকসিন প্রয়োজন।
সবচেয়ে বেশি মাঙ্কপক্স রোগী সনাক্ত হওয়া প্রদেশ কুইবেকে স্মলপক্সের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। উন্মুক্ত ভ্যাকসিন ক্লিনিকে গে ও বাইসেক্সুয়াল কমিউনিটির সদস্যরা স্মলপক্সের ভ্যাকসিন পাচ্ছেন। আলবার্টায় মাত্র ১২ জন মাঙ্কিপক্স রোগী সনাক্ত হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য ইউনিটগুলো পরিস্থিতি অনুযায়ী ভ্যাকসিন দেবে। তবে ভ্যাকসিনের প্রাপ্যতা বাড়ানো দরকার বলে জানান ডা. তেরেসা ট্যাম। তিনি বলেন, আমি মনে করি আমাদের সামাজিক নেটওয়ার্ক সারাদেশের সঙ্গে এমনকি বিশে^র সঙ্গেও ভালোভাবে সংযুক্ত। তাই এক এলাকায় সংক্রমণ দেখা না গেলেও যেকোনো মুহূর্তে তা পৌঁছে যেতে পারে।