
জিনা আথানাসিউর বাবা মারা যান ২০১৬ সালে। এরপর মায়ের সম্পর্কে তার এই ধারণা হয় যে, জীবনের বেশিরভাগ সময়ই তিনি কাটিয়েছেন কানাডা ও গ্রিসে যাওয়া-আসার মধ্য দিয়ে। টরন্টোতে উচ্চ মূল্যের বাড়িতে থাকার মতো যথেষ্ট পরিমাণ পেনশনও তার নেই। তাহলে সমাধান কী? রিয়েল এস্টেট এজন্ট আথানাসিউ মাকে পূর্ব ইয়র্কে তার বাড়িতে চলে আসার আমন্ত্রণ জানালেন। ওই বাড়িতেই আথানাসিউ তার স্বামী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন।
আথানাসিউ বলছিলেন, মা তার নিজের অর্থে টরন্টোতে থাকবেন সেই অবস্থা নেই। যদি না তিনি আমাদের সঙ্গে একত্রে থাকেন।
এক ছাদের তলায় আথানাসিউর পরিবারের তিন প্রজন্মের থাকার এই যে আয়োজন, ক্রমেই তা জনপ্রিয় হচ্ছে। বুধবার প্রকাশিত স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার প্রতিবেদনে তেমনটাই উঠে এসেছে।
লোকজনের একা বসবাসের ঘটনা রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার তথ্য যেমন আছে, একইভাবে রুমমেট অথবা একটি পরিবারের একাধিক প্রজন্মের একত্রে বসবাসের অনুপাতও দ্রুত বাড়ছে। একাধিক প্রজন্ম ভাগাভাগি করে থাকছে, দুই বা ততোধিক পরিবার একত্রে থাকছেন অথবা পরিচিত বা অপরিচিত মানুষের সঙ্গে বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা গত ২০ বছরে ৪৫ শতাংশ বেড়েছে। ২০২১ সালে এ ধরনের পরিবারের সংখ্যা ছিল প্রায় ১০ লাখ, কানাডার মোট বাড়ির যা ৭ শতাংশ।
গত বছর যে ৫ লাখ ৫৩ হাজার ৮৫৫ জন শিশু গ্র্যান্ডপ্যারেন্টদের সঙ্গে বসবাস করতো তাদের ৯৩ শতাংশ অন্তত বাবা বা মা এবং প্রপিতামহ বা প্রমাতামহের সঙ্গে বাস করেছে। স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক নোরা গালব্রেইদ বলেন, নুনাবাটে ৫ বছরের কম বয়সী প্রতি তিনজন শিশুর মধ্যে অন্তত একজন তাদের প্রপিতামহ বা প্রমাতামহের সঙ্গে বসবাস করে। এটাই কানাডায় সর্বোচ্চ সংখ্যা। এই হার সবচেয়ে কম কুইবেকে ৫ শতাংশ।
জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির অনুপাতে মজুরি বৃদ্ধি না পাওয়াকে এর কারণ বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ও জনসংখ্যাবিদরা। অভিবাসন ও বাড়ির মূল্য বৃদ্ধিও এর আরও দুটি কারণ।
কানাডিয়ান রিয়েল এস্টেট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে কানাডায় বাড়ি বিক্রি হয়েছিল গড়ে ৭ লাখ ১১ হাজার ৩১৬ ডলার। গত বছরের একই মাসে যেখানে বাড়ির দাম ছিল গড়ে ৬ লাখ ৮৭ হাজার ৫৯৫ ডলার।
রেন্টালডটসিএর উপাত্ত অনুযায়ী, জুনে কানাডায় ভাড়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে গড়ে মাসিক ১ হাজার ৮৮৫ ডলার। গত বছরের একই মাসের তুলনায় যা ৯ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।
এদিকে ২০০১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত কক্ষ ভাগাভাগি করে থাকা বাড়ির সংখ্যা বেড়েছে ৫৪ শতাংশ।