চলতি বছর অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করছেন কানাডার বৃহৎ ব্যাংকগুলোর প্রধান অর্থনীতিবিদরা। তবে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে বা সবাইকে ভ্যাকসিন প্রয়োগে ব্যর্থ হলে এটা সম্ভব নাও হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তারা।
বৃহস্পতিবার ইকোনমিক ক্লাব অব কানাডা আয়োজিত বার্ষিক প্রাতরাশ সভায় বিএমও ফাইন্যান্সিয়াল গ্রুপের প্রধান অর্থনীতিবিদ ডগ পর্টার বলেন, আমরা বিশ^াস করি পরবর্তী বছরে সব অর্থনীতিই লক্ষণীয় উন্নতি করবে। তবে কোভিড-১৯ মহামারিকে চলতে দিলে এই উন্নতি নাও হতে পারে।
বিএমও ফাইন্যান্সিয়াল গ্রুপ মনে করে, চলতি বছর ৫ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির দেখা পাবে বিশ^ অর্থনীতি। পরের বছর প্রবৃদ্ধি হবে ৪ শতাংশ। তবে সংক্রমণ যদি বাড়তে থাকে এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে কুইবেকের সান্ধ্যকালীন কারফিউয়ের মতো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় তাহলে ধ্বংসযজ্ঞ চলতেই থাকবে বলে মনে করেন ডগ পর্টার। তিনি বলেন, আশংকার বিষয় হলো এ ধরনের নিয়ন্ত্রণ অনেকদিন থাকতে পারে এবং এর ফলে প্রধান প্রধান অর্থনীতিগুলোয় কার্যক্রম কমবে। এছাড়া যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকায় সনাক্ত হওয়া নতুন ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণ যদিও কানাডা বা অন্য দেশেও ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ে তাহলেও তা হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। পাশাপাশি ভ্যাকসিন বিতরণে শ্লথগতিও অর্থনীতির চাকা নিস্তেজ করে দিতে পারে।
ভ্যাকসিনের বিষয়টি মাথায় আছে সিআইবিসির প্রধান অর্থনীতিবিদ অ্যাভারি শেনফেল্ডেরও। তিনি বলেন, আমার মনে হয় ভ্যাকসিন পাওয়ার পর কানাডিয়ানদের মধ্যে থিয়েটারের টিকিটের চাহিদা ব্যাপকহারে বেড়ে যাবে। স্বাস্থকর্মীদের বাইরে কম ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের কাছেও যখন ভ্যাকসিন পৌঁছে যাবে তখন কানাডায় ব্যয়ের পরিমান বেড়ে যাবে। গত বছরের প্রায় পুরোটা জুড়ে এ ধরনের ব্যয় থেকে বিরত ছিলেন কানাডিয়ানরা।
কানাডায় বেকারত্বের হার ডিসেম্বরের ৮ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৮ দশমিক ৭ শতাংশ হবে বলে মনে করছেন রয়্যাল ব্যাংক অব কানাডার প্রধান অর্থনীতিবিদ ক্রেগ রাইট। নতুন বছর শুরু হওয়ায় চারটি বিষয়ের ওপর মনোযোগ দিচ্ছেন তিনি। এগুলো হলো ওয়ার্ক ফ্রম হোম, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ধরন, দীর্ঘমেয়াদী কর্মসংস্থান ও নারী শ্রমশক্তিতে কোভিড-১৯ এর প্রভাব।
কোভিড-১৯ মহামারির সময় ২৫ লাখ কানাডিয়ান বাড়িতে বসে কাজ করেছেন। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ হাইব্রিড মডেল চাইছেন, যাতে তারা বাড়িতে বসেই কাজ করতে পারেন এবং মহামারি কমে আসলে কর্মক্ষেত্রে যেতে পারেন।
তবে রাইট বলছেন, মাত্র ৩০ শতাংশ কোম্পানি যাদের ওয়ার্ক ফ্রম হোম ব্যবস্থা চালু রাখার সামর্থ রয়েছে কেবল তারাই ব্যবস্থাটি চালু রাখতে পারে। এ নিয়ে রশি টানাটানি চলছে এবং শেষ পর্যন্ত হয়তো হাইব্রিড ব্যবস্থাটি আমরা দেখতে পাব।