কানাডার সেনাবাহিনীর মধ্যে চলমান যৌন অসদাচরণ বিতর্ক চলছে। জেনারেল জোনাথন ভেন্সের সম্ভাব্য অসদাচরণের বিষয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হারজিৎ সজ্জন সঠিক ভূমিকা রাখতে পারেননি বলে সাক্ষ্যও দিয়েছেন সাবেক ন্যায়পাল। তা সত্ত্বেও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ওপর থেকে আস্থা হারাননি প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। পাশাপাশি মাসখানেক আগে চিফ অব স্টাফের অসদাচরণের বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার আগ পর্যন্ত তিনি জানতেন না বলেও দাবি করেছেন।
সামরিক বাহিনীতে যৌন নির্যাতনের শিকার নারীরা বলেছেন, সাবেক সামরিক ন্যায়পাল গ্যারি ওয়াবোর্ন ভেন্সের বিষয়ে তিন বছর আগেই এক ব্যক্তিগত বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু ন্যায়পালের উত্থাপিত প্রমাণ দেখতে অস্বীকার করেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। বিষয়টি শোনার পর তারা মর্মাহত ও হতাশ।
এই নারীদের একজন অবসরপ্রাপ্ত মাস্টার করপোরাল স্টেফানি রেমন্ড। তিনি বলেন, সজ্জনের প্রতি আমার আর আস্থা নেই এবং তার পদত্যাগ অথবা অপসারণ দাবি করছি।
এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বলেন, অভিযোগ শোনার পর তা নিয়ে করণীয় সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব দায়িত্বশীল ও স্বাধীন কর্মকর্তা এবং তদন্তকারীদের। এক্ষেত্রেও আমরা সেটাই করেছি।
২০১৮ সালের ১ মার্চ একটি ব্যক্তিগত বৈঠকে ভেন্সের প্রসঙ্গটি তিনি তুলেছিলেন বলে জানান ওয়ালবোর্ন। ওই বৈঠকের পর প্রতিরক্ষামন্ত্রী সজ্জন এটি প্রিভি কাউন্সিল অফিসকে (পিসিও) জানান। চিফ অব স্টাফের মতো পদে নিয়োগের দায়িত্ব তাদের। জবাবে পিসিও সাবেক ন্যায়পালকে অভিযোগকারীদের নাম ও অভিযোগের বিস্তারিত দিতে বলে। বিষয়টি নিয়ে এগোনো যায় এমন পর্যাপ্ত তথ্য সাবেক ন্যায়পাল কর্মকর্তাদের সরবরাহ করতে পারেননি বলে জানান ট্রুডো।
এরপর গত মাসে গণমাধ্যমের এক খবরে বলা হয়, ওয়ালবোর্নের অসহযোগিতায় ভেন্সের বিরুদ্ধে তদন্ত এগিয়ে নিতে পারেনি পিসিও। জেনাইন শারম্যান নামে এক পিসিও কর্মকর্তা কয়েক মাস চেষ্টা করেও এ-সম্পর্কিত তথ্য হস্তান্তরে সাবেক ন্যায়পালকে রাজি করাতে পারেননি।
অধস্তন এক নারীর সঙ্গে অনুপযুক্ত সম্পর্ক ও আরেক নারীকে বর্ণবাদী ইমেইল পাঠানোর খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর ভেন্সের বিরুদ্ধে চাকরিবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করছে মিলিটারি পুলিশ। তার উত্তরসূরী অ্যাডমিরাল আর্ট ম্যাকডোনাল্ডের বিরুদ্ধেও অসদাচরণের অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ম্যাকডোনাল্ড বর্তমানে ছুটিতে আছেন। এরই মদ্যে ভারপ্রাপ্ত সেনাপ্রধানও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।