সাস্কেচুয়ানের সাবেক একটি আবাসিক স্কুল প্রাঙ্গণে ৭৫১টি অচিহ্নিত কবরের খবরটি যখন ইগলক্ল থম তার পরিবারের সদস্যদের ফোনের মাধ্যমে দিচ্ছিলেন তখন তার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছিল। থম বলছিলেন, মেরিভাল ইন্ডিয়ান রেসিডেন্সিয়াল স্কুলে অচিহ্নিত কবর পাওয়ার খবরটি বৃহস্পতিবার কাউয়েসেস ফার্স্ট নেশনের কাছ থেকে শোনার পর তার হৃদয়ে গভীর একটা ক্ষত রেখে যায়।
৪০ বছর বয়সী থম কাউয়েসেস সংলগ্ন সাকিমে ফার্স্ট নেশনের মানুষ। মেরিভাল রেসিডেন্সিয়াল স্কুলে তার পড়া হয়নি। তবে তার পিতা ও পিতামহরা সেখানে পড়েছেন। তাদের সন্ততিদেরও অনেকে প্রদেশের বিভিন্ন স্কুলে গেছেন।
অটোয়ার বাসিন্দা থম বলেন, জনগণ আবাসিক স্কুল ছাড়তে বা সেখান থেকে পালিয়ে যেতে হয়তো পারে। তবে স্কুল তাদের ছাড়ে না। এটা সাংস্কৃতিক গণহত্যা। একই সঙ্গে আমাদের কমিউনিটির বিরুদ্ধে গণহত্যাও।
মেরভিল স্কুলে যারা মারা গেছে তাদের স্মৃতি মুছে না যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন কাউয়েসেসের প্রধান ক্যাডমাস ডেলোরমে। কবরগুলোতে চিহ্ন ও হেডস্টোন থাকলেও ১৯৬০ সালের দিকে সেগুলো সরিয়ে ফেলা হয়। ক্যাথলিক চার্চের প্রতিনিধিরা সেগুলো সরিয়ে ফেলেন এবং এরপর থেকে কবরগুলো অচিহ্নিত অবস্থায় আছে। সেখানে যারা শুয়ে আছেন আমরা তাদের সম্মান জানাতে চাই। অনেকে এখানে এসে যাতে প্রশান্তি খুঁজে নিতে পারেন সে লক্ষ্যে স্থানটিকে আমরা সংরক্ষণ করব।
গ্রাউন্ড-পেনিট্রেটিং রাডারের সাহয্যে এ মাসের গোড়ার দিকে কবরের অনুসন্ধান শুরু হয় এবং ৭৫১টি কবর রেকর্ড করা হয়। কানাডায় পাওয়া অচিহ্নিত কবরের মধ্যে এটাই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ডেলোরমে বলেন, প্রযুক্তিতে ভুলের হার ১০ থেকে ১৫ শতাংশ। তারপরও কমপক্ষে ৬০০ কবর আমরা ধরে নিতে পারি।
১৮৬০ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ফার্স্ট নেশন্স, ইনুইট ও মেটিসের দেড় লাখ শিশু আবাসিক স্কুলগুলোয় ভর্তি হয়েছিল বলে অনুমান করা হয়ে থাকে। তাদের কারো কারো ও পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে ২০১৫ সালে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন। প্রতিবেদনে আদিবাসী শিশুদের প্রতি শারীরিক, মানসিক দুর্ব্যবহারের ব্যাপারে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। কমপক্ষে ৪ হাজার ১০০ জনের মারা যাওয়ার তথ্যও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।