
পঁচা গন্ধ রীতিমতো অসুস্থ করে তোলে পলা জঙ্গারডেনকে। এই দুর্গন্ধ আসে অন্টারিওর ডেলির কাছাকাছি তার বাড়ি থেকে ৩০০ মিটার দূরে প্রাকৃতিক গ্যাসের কূপ থেকে।
তিনি বলেন, যখন দুর্গন্ধ ছড়ায় তখন আমি ঘরের জানালা খুলতে পারি না। আমার নিজের বাড়ি যেমন ইচ্ছা ব্যবহার করতে না পারা সত্যিই উদ্বেগের। শুধু আমি নই, এই এলাকায় বসবাসকারী সবাই ব্যাপারটা জানেন। তাদের একটাই জিজ্ঞাসা, আপনি কি ওই দুর্গন্ধের কাছে থাকেন?
জঙ্গারডেন পেশায় নার্স ছিলেন। এখন অবসরে আছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তিনি ও তার প্রতিবেশীদের সবাই নাকাল। পরিত্যক্ত গ্যাস কূপ থেকে মিথেন ও অতি ঘন বিষাক্ত গ্যাস হাইড্রোজেন সালফাইড বেরিয়ে আসার ঘটনা সেই ২০১৫ সাল থেকেই এলাকাটিতে ঘটছে।
কাছাকাছিই থাকেন ইউনিভার্সিটি অব ওয়াটারলুর পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ব্রায়ান ক্রেইগ। তিনি বলেন, জঙ্গারডেনের বাড়ির পাশের কূপটি খনন করা হয়েছিল ১৯৫০ এর দশকে। পরবর্তীতে এটা ব্যবহার অযোগ্য প্রমাণিত হলে ১৯৬৮ সালে ঢেকে দেওয়া হয়। এর ফলে এলাকার অন্যান্য কূপ থেকে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস বেরিয়ে আসতে থাকে। এ কারণে পাশেই একটি রিলিফ কূপ খনন করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে অন্টারিও সরকার রিলিফ কূপটি ভর্তি করে ফেলে এবং এটাই বিদ্যমান সমস্যার কারণ বলে তিনি ও তার প্রতিবেশীরা মনে করেন।
তবে এর বড় কোনো প্রভাব এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেন প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র। আর একাধিকবার বিষয়টি সামনে আনার চেষ্টা করলেও লাল ফিতায় তা আটকে গেছে বলে মন্তব্য করেন ক্রেইগ। তিনি বলেন, পরিত্যক্ত কূপগুলো ঠিক করার একটা কর্মসূচি প্রাদেশিক সরকারের রয়েছে। তবে কর্মসূচিটিতে পর্যাপ্ত তহবিলের জোগান নেই। হাইড্রোজেন সালফাইড অপসারণে আমাদের একটি পরিশোধনাগারের প্রয়োজন। ছয় বছর ধরে সে চেষ্টা চলছে। ১৪ লাখ ডলার খরচও হয়ে গেছে। তারপরও দৃশ্যমান কিছু ঘটেনি এখন পর্যন্ত।
এ সমস্যার একটা সমাধান বের করতে নতুন একটি গবেষণা চলছে। তবে এলাকাবাসীকে কূপ থেকে বেরিয়ে আসা গ্যাসের দুর্গন্ধ সহ্য করেই বসবাস করতে হচ্ছে। জঙ্গারডেন বলেন, দীর্ঘমেয়াদে মানব স্বাস্থ্যের ওপর এর কি প্রভাব পড়ে সেটা নিয়েই আমি বেশি উদ্বিগ্ন। এর ফলে জনস্বাস্থ্যের কি হচ্ছে কেই বা জানে।
অন্টারিও সরকারের প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, পরিত্যক্ত কূপ কর্মসূচি নামে একটি কর্মসূচি ২০০৫ সালে গ্রহণ করেছে সরকার। সেই থেকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ৩৮০টির মতো কূপ বন্ধে ২ কোটি ৩০ লাখ ডলার খরচ করা হয়েছে।