২০২০ সালের জানুয়ারিতে ইরানি সেনাবাহিনীর গুলিতে যাত্রীবাহী একটি উড়োজাহাজ ভূপাতিত হওয়ার ঘটনাকে ‘মনুষ্য ভ্রম’ বলে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে দেশটির বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ। যদিও কানাডার সরকার এ প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে।
গত বছর ৮ জানুয়ারি তেহরান থেকে ইউক্রেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৭৫২ তেহরান বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পরপরই ইরানের রেভ্যুলুশন গার্ডের গুলিতে ভূপাতিত হয়। একটি এয়ার ডিফেন্স ইউনিট ভুলবশত একে শত্রু বিমান হিসেবে চিহ্নিত করার কারণেই গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ইরান। ১৪৫ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনটি ইরানের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে, যা প্রত্যাখ্যান করেছেন কানাডার পরিবহনমন্ত্রী ওমর আলঘাবরা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক গারনো।
এক সাক্ষাৎকারে গারনো বলেছেন, উড়োজাহাজটি গুলি করে নামানোর প্রকৃত কারণ আড়াল করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনটি অসম্পূর্ণ মনে হয়েছে এবং এতে তথ্য-প্রমাণের ঘাটতি রয়েছে। ইরাক সীমান্তে দুটি মার্কিন সামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পরও ইরান কি উদ্দেশ্যে অধিকাংশ আকাশসীমা বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রেখেছিল সে ব্যাখ্যা প্রতিবেদনে দেওয়া হয়নি।
ওই ঘটনায় উড়োজাহাজটির ১৭৬ আরোহীর সবাই নিহত হন। নিহতদের মধ্যে কানাডার নাগরিক ছিলেন ৫৫ জন। এছাড়া ৩০ জন কানাডার স্থায়ী বাসিন্দা ও আরও অনেকে কানাডায় যাচ্ছিলেন। ফেডারেল সরকার বরাবরই আন্তর্জাতিক মানদন্ড বজায় রেখে এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছে। কানাডার একটি ফরেনসিক টিম আংশিক গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের একটি প্রতিবেদন আগামী কয়েক দিনের মধ্যে প্রকাশ করবে বলে জানান আলঘাবরা।
শুরুতে ইরান ওই দুর্ঘটনার দায় নিতে চায়নি। এর তিনদিন পর তারা ঘোষণা করে, কিয়েভ অভিমুখী বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটি দুর্ঘটনাবশত মিসাইলের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে। অন্তত একটি মিসাইল উড়োজাহাজটিকে আঘাত করছে এমন ভিডিও সামনে আসার পর ওই ঘোষণা দেয় ইরান।