জয়দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার জন্য কানাডিয়ান নির্বাচনে অটোয়ার বিদেশি হস্তক্ষেপের অভিযোগকে দায়ী করেছেন কানাডায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত। তবে এজন্য কানাডাকে তারা শাস্তি দিচ্ছে না বলে দাবি করেন তিনি।
কয়েক বছর ধরে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েনের পর এই মন্তব্য করলেন তিনি। কানাডিয়ান নাগরিক মাইকেল স্প্যাভর ও মাইকেল কভরিগকে ২০১৮ সালের শেষ দিক থেকে ২০২১ সালের হেমন্ত পর্যন্ত আটক করে রাখে বেইজিং। একই সঙ্গে চীন কানাডার মাংস ও ক্যানোলা আমদানির ওপর কয়েক বছরের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কানাডিয়ান সরকার চীনকে বিশৃঙ্খল বৈশি^ক শক্তি এবং বিদেশি হস্তক্ষেপের চেষ্টার জন্য বেইজিংয়ের নাম ঘোষণা করার এক বছর পর চীন সরকার কানাডাকে পরিত্যাগ করে এবং গ্রুপ ট্রাভেলের ওপর বিধিনিষেধ শিথিল করে। বিশ্লেষকদের মতে, এসবই নীতি পরিবর্তনে কানাডাকে বাধ্য করতে অর্থনৈতিক পদক্ষেপ।
তবে কানাডায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত কং পেইউ বিষয়গুলোকে এভাবে দেখছেন না। দ্য কানাডিয়ান প্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, কানাডার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বা কানাডাকে শাস্তি দিতে বাণিজ্যকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে না চীন। আমি বিশ^াস করি এই সম্পর্ককে স্বাভাবিক পথে আনতে অবশ্যই সে ধরনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। একটা বিষয় এখানে নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ এবং তা হলো চীন কেমন. তার নীতি কী সে ব্যাপারে যৌক্তিক ধারণা।
চীন কানাডাকে শাস্তি দিচ্ছে না বলে কং যে দাবি করেছেন তা মানতে রাজি নন ইউনিভার্সিটি অফ অটোয়ার অধ্যাপক আন্দ্রে লালিবার্তে। পূর্ব এশিয়ার তুলনামূলক রাজনীতি পড়ানো লালিবার্তে বলেন, প্রমাণ যা দেখাচ্ছে ব্যাপারটা অতটা সরল নয়। আপনি যদি আমাদের সঙ্গে বাণিজ্য করতে চান তাহলে আমাদের অবস্থা, সময়কে আপনাকে সম্মান দেখাতে হবেÑএমনটা বলা হচ্ছে।
রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বেইজিং ২০২৩ সালের প্রথম আট মাসে কানাডায় পণ্য রপ্তানি ১৭ শতাংশ বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে। বাণিজ্য ও বিনিয়োগের এই বৃদ্ধির জন্য এ বছরের গোড়ার দিকে কোভিড-১৯ পরবর্তী বেইজিংয়ের অর্থনৈতিক কর্মকা- উন্মুক্ত করে দেওয়াকে দায়ী করেছে ইউনিভার্সিটি অব আলবার্টার চায়না ইনস্টিটিউট। গত মাসে এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, চীনের অর্থনীতি শ্লথ হতে শুরু করলেও কানাডা-চীন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য গত মাসে সর্বকালের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। যদিও দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে রয়েছে।