গত ৭ অক্টোবর শনিবার দেখতে গিয়েছিলাম ‘উত্তরের জানালায়’র আয়োজনে গীতিকাব্য ‘ দেখা হলো বছর কুড়ি পর’ । অনুষ্ঠানটি শুরু করা হয় সদ্য প্রয়াত কবি আসাদ চৌধুরীর বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালনের মধ্য দিয়ে। অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয় প্রিয় কবির প্রতি সম্মান জানিয়ে।
অনুষ্ঠানটি টিয়া নামের একজন বারবনিতার জীবনের চাওয়া পাওয়া, আশা আকাঙ্ক্ষার গল্প নিয়েই সাজানো হয়েছিল ‘ দেখা হলো বছর কুড়ি পর’ । অনুষ্ঠানটি পাঁচটি পর্বে সাজানো ছিল পাঁচ জোড়া বাচিকশিল্পীর অসাধারণ আবৃত্তি দিয়ে। প্রতিটি পর্বের কবিতাই ছিল বহুল পঠিত বিখ্যাত জনপ্রিয় কবিদের লেখা কবিতা। তাই দর্শকদের মন কাড়তে খুব বেশি সময় লাগেনি। ব্যাকগ্রাউন্ডে ছিল পদ্মা নদীর মাঝি আর চোখের বালি চলচ্চিত্রের নির্বাক ভিডিও। এক পর্ব থেকে অন্য পর্বে যাওয়ার আগে শুনছিলাম Edward Milton এর পর্বের সাথে মিল রেখে দরাজ কন্ঠের চমৎকার সব গান। গানগুলো যেন পুরো অডিটরিয়ামের পরিবেশকেই নিয়ে যাচ্ছিল অন্য কোন ভূবনে। সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত নয়টা এই তিন ঘণ্টা সময় যে কোথা দিয়ে কেটে গেছে বুঝতে পারিনি। মনে হয়েছিল অনেক দিন পর ফিরে গিয়েছি নাটমন্ডলে, পাবলিক লাইব্রেরী , শিল্পকলা বা জাদুঘর মিলনায়তনে কোন কবিতার উৎসবে।
ফ্লোরা শুচি, সবুজ হক, জিনাত টুম্পা , আসিফ চৌধুরী সবার আবৃত্তি বহুবার শুনেছি দেখেছি লাইভে। কাল দেখা হলো সরাসরি। কথা হলো খুব ভাল লাগা নিয়ে। জিনাত জাহান টুম্পা এসেছে আমেরিকার ওকলোহোমা থেকে। ও আমার বন্ধু সুপর্নার ছোট বোন। একবার আমি আর টুম্পা উত্তর আমেরিকার কবিতা উৎসবে একসাথেই একটা লাইভ করছিলাম। সে লাইভে ও আমাকে অবাক করে দিয়ে আবৃত্তি করেছিল আমার লেখা কবিতা ‘২১ এখন’। আমি বিস্ময় নিয়ে মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনছিলাম ওর চমৎকার আবৃত্তি। কাল দেখা হয়ে খুব ভাল লাগল আমার লেখা কাব্যগ্রন্থ ‘ এলোমেলো ভাবনা ‘ বাচিকশিল্পী টুম্পা আর সবুজ হককে উপহার হিসেবে দিতে পেরে।
অনুষ্ঠানটির গ্রন্থনায় সবুজ হকের সাথে বাংলাদেশ থেকে ছিলেন আমার কবি বন্ধু শিরিন আক্তার । আর ধারা বর্ণনায় সুমন হকের সাথে ছিলেন বাচিকশিল্পী সামিরা সামাদ । দৃষ্টান্ত হয়ে থাকলো উত্তরের জানালার চমৎকার ছিমছাম গোছানো পরিবেশনটি। এমন একটা গোছানো পরিচ্ছন্ন অনুষ্ঠান করতে যে মেধা , ধৈর্য্য আর পরিশ্রম করেছেন উত্তরের জানালার পুরো টিম সেটা ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেক অনেক অভিনন্দন আর শুভেচ্ছা জানাই উত্তরের জানালার সব টিম মেম্বারদের প্রতি।