কোভিড-১৯ মহামারির শুরু থেকেই কানাডাজুড়ে খাবারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে রয়েছেন রেস্তোরাঁ মালিকরা। রেস্তোরাঁয় ব্যবহৃত কিছু উপাদানের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক।
মহামারির আগে ব্লেয়ার লেবস্যাক তার এডমন্টনের রেস্তোরাঁ আরজিই আরডির জন্য ক্যানোলা অয়েলের ১৬ লিটারের একটি কনটেইনার কিনতেন ১৮ ডলার দিয়ে। এখন তা কিনতে হচ্ছে ২৯ থেকে ৩২ ডলার দিয়ে।
সত্যিই দামটা বড্ড বেড়েছে, বলছিলেন লেবস্যাক।
উচ্চ পরিবহন ব্যয়, বিলম্ব ও খাদ্যশস্যের বর্ধিত মূল্যের কারণে মহামারির ফলে আরোপিত বিধিনিষেধে ক্ষতিগ্রস্ত রেস্তোরাঁগুলোর খাবারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। রেস্টুরেন্টস কানাডার জেমস রিলেট বলেন, রেস্তোরাঁ কম মার্জিনের শিল্প। তাই বাড়তি ব্যয় পুষিয়ে নেওয়ার মতো তেমন কোনো উপায় নেই। এটা খুবই খারাপ পরিস্থিতি। অধিকাংশ প্রদেশ উন্মুক্ত করে দেওয়ার আগ পর্যন্তও আমাদের মধ্যে এমন ধারণা তৈরি হয়নি।
রেস্তোরাঁগুলোর ওপর একটি সমীক্ষা চালিয়েছে রেস্টুরেন্টস কানাডা। সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, রেস্তোরাঁগুলোকে বর্তমানে প্রধান যে তিনটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে খাবারের দাম বৃদ্ধি তার মধ্যে একটি।
রেস্টুরেন্টস কানাডার সেন্ট্রাল কানাডার ভাইস প্রেসিডেন্ট রিলেট বলেন, যদিও অধিকাংশ রেস্তোরাঁ মালিক মেনুর দাম বাড়ানো যতটা সম্ভব বিলম্বিত করার চেষ্টা করবেন তারপরও বলব, গ্রাহকদের বাড়তি মূল্য পরিশোধ করতে হতে পারে।
কানাডার ফুড প্রাইস রিপোর্টেও খাদ্যমূল্যের ওপর মহামারির বড় ধরনের প্রভাবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনের প্রধান লেখক ডালহৌসি ইউনিভার্সিটির এগ্রি-ফুড অ্যানালাইটিকস ল্যাবের পরিচালক সিলভেইন চার্লবোয়িস বলেন, গত বছর যখন মহামারি শুরু হয় তখন খাদ্য শিল্প কোনো না কোনোভাবে ভোক্তাদের রক্ষা করেছিল। গত বছরেও মূল্য বেড়েছিল। তবে মহামারির কিছু ধাক্কা শিল্পটি সইতে পেরেছিল। ২০২০ সালে খাদ্যমূল্য ৩ শতাংশ বাড়লেও এ বছর বেড়েছে ৫ শতাংশ। অনেকেই হয়তো বলবেন, ৫ শতাংশ আবার এমন কি? কিন্তু ৫ শতাংশও কম নয়।
স্ট্যাটিস্টিক্স কানাডার মাসভিত্তিক গড় খুচরা মূল্যের উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের মে পর্যন্ত প্রতি কেজি রিব রোস্টের দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ। ২০০ গ্রাম ইনস্ট্যান্ট কফির দাম বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ।
স্থানীয় উৎস থেকে পণ্য সংগ্রহ করে উচ্চ মূল্যের ধাক্কা সামলানোর একটি সুযোগ রয়েছে রেস্তোরাঁগুলোর সামনে। লেবস্যাকও তার আরজিই আরডি রেস্তোরাঁর জন্য সেটাই করছেন। স্থানীয় খামারে পালিত পশু সংগ্রহ করছেন তিনি। খবর: দ্য কানাডিয়ান প্রেস।