গত সপ্তাহে চেনা কফি শপটিতে যাওয়ার আগে উদ্বেগের ঝড় বইয়ে গিয়েছিল সামান্থা ইয়াসমিনের মধ্যে। কফি শপে পা রেখে পছন্দের পানীয়টি অর্ডার করা এই নিউরোসায়েন্টিস্টের জন্য আগে যতটা সহজ ছিল এবার আর ততটা সহজ মনে হয়নি।
অন্টারিও কোভিড-১৯ সংক্রান্ত আরও কিছু বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় মহামারি-পূর্ব সামাজিক জীবন ফিরে পেতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন অনেকে। তবে ইয়ামিনের মতো কেউ কেউ আবার আরও বেশি ভয়ের মধ্যে পড়ে যাচ্ছেন। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে সায়েন্স স্যাম নামে পরিচিত এই সায়েন্স কমিউনিকেটর বলছিলেন, মহামারি নিয়ে ১৬ মাস ধরে সতর্কতার জের হিসেবে এমনটা হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। চাপ ও ভয়ের ব্যাপারে আমাদের মস্তিষ্ক খুব বেশি সতর্ক থাকে। এ কারণেই মানুষের মধ্যে উদ্বেগের অনুভূতি তৈরি হয়। তবে আশার কথা হলো আমাদের মস্তিষ্ক অনেকটা মাংসপেশীর মতো যার পুনরায় শেখার সামর্থ রয়েছে। কোনো মাঠের একই পথ ধরে যদি আপনি দিনের পর দিন পার হতে যেতে থাকেন তাহলে ঘাসের মধ্যে একটা রাস্তা তৈরি হয়ে যায়। এটাও অনেকটা সেই রকম। কিন্তু আপনি যদি ওই পথে হাঁটা বন্ধ করে দেন তাহলে ঘাসগুলোও আবার ফিরে আসতে থাকবে।
অন্টারিও বুধবার রিওপেনিং পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করেছে। এই ধাপে ইনডোরে সর্বোচ্চ পাঁচজনের জমায়েতের পাশাপাশি ধারণক্ষমতার সীমিত ব্যবহার করে কিছু খুচরা ব্যবসা ও ধর্ময়ি আচার অনুষ্ঠান পরিচালনার সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে অন্যান্য প্রবেশ এতোটা সতর্কতা অবলম্বন করছে না। যেমন আলবার্টা গত বৃহস্পতিবার মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার করার পাশাপাশি ধারণক্ষমতার পুরোপুরি ব্যবহার করে রেস্তোরাঁ, বার ও খুচরা বিক্রয়কেন্দ্র খুলে দিয়েছে।
ইয়াসমিন বলছিলেন, অধিক সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টও কারও কারও মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করছে। বিশেষ করে সেইসব এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে যেখানে ভ্যাকসিন গ্রহণের হার তুলনামূলক কম। তবে উদ্বেগের অন্য কারণ থাকতে পারে বলেই মনে করেন তিনি।
ইয়াসমিনের ভাষায়, কফি শপের বিষয়ে তার যে উদ্বেগ তা কোভিড-১৯ মহামারির ফলে সৃষ্ট ভয়ের কারণে নয়। বরং এটা সাধারণ ভীতি। কফি শপে যাওয়ার পথে বন্ধুর সঙ্গে কথা বলার বিষয়টি নিরাপত্ত বোধের অনুবূতির সঙ্গে সম্পর্কিত। পরিস্থিতি মানিয়ে নেওয়ার অন্য উপায়ও অবলম্বন করতে পারেন অনেকে।
যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত সাম্প্রতিক এক সমীক্ষার ফল বলছে, ৫০ শতাংশের মতো মার্কিন নাগরিকের মধ্যে রিওপেনিং নিয়ে কিছু না কিছু উদ্বেগ কাজ করছে। উত্তর আমেরিকাজুড়ে পরিচালিত একই ধরনের সমীক্ষার ফলাফলও প্রায় একই রকম। খবর: দ্য কানাডিয়ান প্রেস।