আগামী বছর কানাডায় কর্মীদের বেতন বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বর্ধিত মূল্যস্ফীতির কারণে এতে কোনো ধরনের পার্থক্য নাও খুঁজে পেতে পারেন কর্মীরা। বুধবার প্রকাশিত লাইফওয়ার্কসের সমীক্ষায় তেমনটাই বলা হয়েছে।
কানাডার নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বেতন পরিকল্পনা নিয়ে পরিচালিত সমীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী, ২০২২ সালে কর্মীদের বেতন বার্ষিক ২ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়তে পারে। তবে বেতন বন্ধ রেখেছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো বাদ দিলে আগামী বছর বেতন বাড়বে ২ দশমিক ৭ শতাংশ। গত অর্ধ দশকে এটাই সর্বোচ্চ বেতন বৃদ্ধি।
কিন্তু এ বেতন বৃদ্ধি কানাডার ধারাবাহিক মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির নিচে থাকতে পারে, যা সার্বিকভাবে ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা বলছে, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের আগস্টে ভোক্তা মূল্যসূচক বেড়েছে ৪ দশমিক ১ শতাংশ। ২০০৩ সালের পর এটা বছরওয়ারি সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির এ ধারা সামনের মাসগুলোতেও অব্যাহত থাকলে ভোক্তারা এখনকার মতো এতো বেশি পণ্য ও সেবা ক্রয়ে সমর্থ হবেন না।
লাইফওয়ার্কসের অংশীদার আনান্দ পারসান বলেন, ঐতিহাসিকভাবে আমরা মূল্যস্ফীতির চেয়ে বেশি হারে বেতন বৃদ্ধি দেখে আসছি। তাহলে প্রকৃতপক্ষেই বেতন বাড়ে। কিন্তু বর্তমানে বেতন বৃদ্ধির চেয়ে মূল্যস্ফীতির হার বেশি বাড়ছে।
তারপরও সমীক্ষা অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হারে বেতন বাড়তে যাচ্ছে। পারসান বলেন, প্রতিভাবান কর্মী আকর্ষণে প্রতিষ্ঠানগুলোকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাধ্য হয়ে বেতন বাড়াতে হচ্ছে তাদের। তবে সেটা প্রতিষ্ঠানগুলোর বেতন পরিশোধের সামর্থ্যরে এবং অর্থনীতি কোন দিকে যাচ্ছে তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে।
যদিও মূল্যস্ফীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ব্যাংক অব কানাডা। মহামারির কারণে সরবরাহ বিঘœতায় এমনটা হয়েছে বলে তারা মনে করছে এবং তাদের ধারণা এটা সাময়িক।
বেতনের চেয়ে মূল্যস্ফীতির হার বেশি হওয়ার ধারণাটি অপরিপক্ক বলে মনে করেন ডমিনিয়ন লেন্ডিং সেন্টারসের প্রধান অর্থনীতিবিদ শেরি কুপার। তিনি বলেন, এটার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। কারণ, মূল্যস্ফীতির চাপ সাময়িক সময়ের জন্য কিনা এখন পর্যন্ত আমরা তা জানি না। তার ভাষায়, মহামারির শুরুর দিকে মূল্য পড়ে যাওয়ার পর তার বৃদ্ধি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার ইঙ্গিত।
লাইফওয়ার্কসের সমীক্ষা অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি বেতন বৃদ্ধি প্রত্যাশা করা হচ্ছে পাইকারী ব্যবসার ক্ষেত্রে। বেতন বন্ধ রাখা প্রতিষ্ঠানগুলো বাদ দিলে এ খাতে বেতন বাড়তে পারে ৩ দশমিক ১ শতাংশ। ৩ শতাংশ বেতন বাড়তে পারে নির্মাণ, আবাসন, খাদ্য সেবা এবং তথ্য-প্রযুক্তি খাতে।
লাইফওয়ার্কস বেতন পূর্বাভাস নিয়ে তাদের ৩৯তম বার্ষিক সমীক্ষা পরিচালনা করেছে জুলাই ও আগস্টে। ৮২৯টি প্রতিষ্ঠানের ওপর সমীক্ষাটি চালানো হয়েছে।