নমনীয় সুরে বা প্রায় অনুরোধের ভঙ্গিতে কথা বললেন অন্টারিওর পপুলিস্ট নেতা ও প্রিমিয়ার ডগ ফোর্ড। অন্টারিওবাসীর প্রতি মনোবল না হারানোর আহ্বান জানিয়ে সাম্প্রতিক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমি জানি মহামারি জনগণকে বিষন্ন করে তুলেছে। কিন্তু ভ্যাকসিন এসে গেছে। অর্থনীতিও ঘুরে দাঁড়াবে। অন্টারিও আগের অবস্থায় ফিরবে। আমাদের মনোবল দৃঢ় রাখতে হবে। আগামী কিছুদিনের জন্য আমাদের বন্ধর পথ পাড়ি দিতে হবে।
ডগ ফোর্ড ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পর যেভাবে শাসনকাজ চালিয়ে আসছিলেন, ২০২০ সালটাও সেভাবেই শুরু করেছিলেন। নিয়মিত বিত-ায়ও জড়িয়েছেন। বিবাদে জড়িয়েছেন প্রদেশের টিচার্স ইউনিয়নের সঙ্গেও। সবচেয়ে বড় কথা এ বছরই দ্বিতীয় দফায় প্রিমিয়ার হওয়ার প্রচারণা শুরু করতে চেয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারি সবকিছু বদলে দিয়েছে। জনসংযোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান নেভিগেটরের প্রিন্সিপাল ও টরন্টো মেয়র জন টরির সাবেক জনসংযোগ পরিচালক আমান্দা গলব্রেইথ বলছিলেন, সবার কাছেই ডগ ফোর্ড এখন ‘প্রিমিয়ার ড্যাড’ হয়ে উঠেছেন। রাজপথে রাজনৈতি যোদ্ধার যে স্পিরিট, সেটা এখনও তার মধ্যে আছে। তবে একে বশে আনতে শিখেছেন প্রিমিয়ার ফোর্ড।
কোভিড-১৯ মহামারি ডগ ফোর্ডকে মানবিক হতে শিখিয়েছে বলে মন্তব্য করেন উইলফ্রিড লরিয়ার ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ও প্রদেশের সাবেক লিবারেল সরকারের মন্ত্রী জন মিলয়। তিনি বলেন, সবার কাছে ডগ ফোর্ড ছিলেন ডানপন্থী আঙ্কেলের মতো। কিন্তু হঠাৎ দেখলাম, প্রদেশের সবকিছুর ব্যাপারেও তিনি বেশ মনোযোগী। মাঝেমধ্যে তার হতাশা ও ভঙ্গুরতাও সামনে এসেছে।
ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক পিটার গ্রায়েফ বলছিলেন, ডগ ফোর্ড সময়টাকে আয়ত্ত করেছেন এবং আপনি এটা তার কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারেন না।
বসন্তের শুরুর দিকে ডগ ফোর্ডের স্কুল খোলার পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়েছিল। অভিভাবক ও শিক্ষক ইউনিয়ন আরও সময় নেওয়া শিক্ষক নিয়োগের যে দাবি করেছিলেন, তা নিয়ে তাদের সঙ্গে বিতর্কেও জড়িয়েছিলেন তিনি। সুরক্ষা বলয় তৈরির ব্যাপারে ডগ ফোর্ডের প্রতিশ্রুতির পরও লং-টার্ম কেয়ার হোমে কোভিড-১৯ এ মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার কারণেও সমালোচনায় পড়তে হয়েছিল তাকে। আর দ্বিতীয় দফায় প্রদেশজুড়ে লকডাউনের ঘোষণায় তো অন্টারিওর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও মিউনিসিপ্যাল পর্যায়ের রাজনীতিকরা রীতিমতো ক্ষুব্ধ।