বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
3 C
Toronto

Latest Posts

কানাডায় করোনা রাজনীতিতে সমব্যাথী হওয়ার অপরিহার্যতা

- Advertisement -

বলার অপেক্ষা রাখে না, করোনা মহামারি প্রতিরোধে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রয়াস অপরিহার্য। তেমনি কানাডার রাজনীতিতে সে চ্যালেঞ্জ প্রতিহতেরও বিকল্প নেই। এতে সুখবরের মাঝে অধিকাংশ প্রাদেশিক ও ফেডারেল রাজনীতিকই বছর শেষের ছুটিতে দেশের বাইরে বেড়াতে যাননি। আর দুঃসংবাদের মাঝে এক থেকে দুই, এমনকী ডজনখানেক রাজনীতিক নিয়মের তোয়াক্কা না করে অর্থাৎ ব্যতিক্রম ঘটিয়ে বাইরে গিয়ে ছুটি কাটিয়েছেন। অবশ্য সেই ব্যতিক্রম বলতে গেলে, জাজ্বল্যমান বা স্পষ্টত গর্হিত।

- Advertisement -

এর মাঝে অন্টারিও প্রদেশের অর্থমন্ত্রী রড ফিলিপস গ্রীষ্মমন্ডলীয় সেন্ট বার্টস দ্বীপে অবকাশ যাপনে যান, যে জায়গাটি যুক্তরাজ্যের ডেইলি মেইল পত্রিকায় মহামারিতে ধনী ও প্রখ্যাতদের পছন্দনীয় আশ্রয়স্থল হিসেবে বিবেচিত। তাতে ওই মন্ত্রীর স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও ছাদের ছায়ায় প্যানকেক খাওয়ার অসংখ্য ছবি ও নিজের নির্বাচনি এলাকার ভোটারদের প্রতি শুভেচ্ছা জ্ঞাপণপূর্ণ ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু জনমতের দাবিতে তিনি একান্ত বাধ্য হয়েই অবকাশ সংক্ষিপ্ত করে বাড়ী ফিরে আসেন এবং মন্ত্রী পরিষদের জোষ্ঠ্য মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান থেকে ইস্তেফা দেন।

আর আলবার্টা প্রদেশে সে সংখ্যা রীতিমত বিস্ময়কর, যাদের সবাই ইউনাইটেড কনজারভেটিভ পার্টির সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু প্রদেশটির প্রিমিয়ার জেসন কেনী তাদের কোনো প্রকার শান্তি প্রদানে অনাগ্রহী। সেক্ষেত্রে অর্ধ-ডজন পার্টি নেতৃবৃন্দসহ তার চিফ অব স্টাফ রেহাই পেয়ে যান।

অপরদিকে, ৫ জন ফেডারেল এমপি ডিসেম্বরে দেশের বাইরে গেছেন। এদের মাঝে এনডিপি’র নিকি অ্যাশটন এবং লিবারেলের কামাল খেরা ও সামির জুবেরি পরিবার সদস্যের মৃত্যু ঘটায় কিংবা অসুস্থ থাকায় দেখতে গেছেন। যদিও এই অজুহাত গ্রীস্মমন্ডলীয় দ্বীপে যাওয়ার তুলনায় মানবিক ও ভিন্নতর।

তারপরও ওই মৃত্যু ও অসুস্থতা কানাডার জনগণ সরাসরি দেখেনি বলে পুরো বিষয়টি প্রশ্নসাপেক্ষই থেকে গেছে। কারণ, তারা ওই ভ্রমণের ঝুঁকিকে দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে অধিকতরই গুরুত্ব দিয়েছেন। সে কারণে নিকি অ্যাশটনের সংসদীয় সমালোচকের মর্যাদাটি এনডিপি কেড়ে নিয়েছে এবং লিবারেলের ওই দুই এমপি যথাক্রমে কামাল খেরা ও সামির জুবেরি তাদের সংসদীয় সচিব মর্যাদাটি হারিয়েছেন।

আর উচ্চকক্ষ সিনেটে কনজারভেটিভ নেতা ডন প্লেট বাধ্য হয়েই গত সোমবার স্বীকার করেছেন যে, তিনি কয়েকদিনের সফরে মেক্সিকো গেছেন। বাস্তবে তার পরিকল্পনা ছিল সেখানে দীর্ঘ সময় কাটানোর; কিন্তু অন্টারিও প্রাদেশিক অর্থমন্ত্রী রড ফিলিপসের খোঁজ পড়ে গেলে, তিনি বাধ্য হয়েই ফিরে আসেন।

এতে দৃশ্যমান যে, যখন সামষ্টিক বা সম্মিলিত উদ্যোগ জড়িত, তখন কাউকে দেখা না গেলেই, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির খোঁজ পড়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক। এ ধরণের খোঁজ কোনো তাৎক্ষণিক দুর্ঘটনাতেও পরিলক্ষিত। কারণ, সমব্যাথী অবস্থানটি সকলকে উদ্বেলিত করে তোলে।

এক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তন একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তাতে ভূপৃষ্টের উত্তাপ বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে কানাডার রাজনৈতিক উদ্যোগের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও সৌদি আরবের ভূমিকার প্রতিও সকলের নজর পড়াটা স্বাভাবিক।

তাই স্বাভাবিকভাবেই করোনা মহামারিতে সকলের সম্মিলিত উদ্যোগের ক্ষেত্রে কেউ ব্যতিক্রমী হওয়াটা দিবালোকের মতো প্রস্ফূটিত এবং তাতে সেই ব্যতিক্রমী ব্যক্তির প্রতি কটাক্ষের তীর নিমিষে ছুটে আসে। এজন্য চাই, কারও আদর্শ অনুসরণ করা নতুবা অনুসরণীয় হতে আইনের বাধ্যবাধকতা আরোপ জরুরি। কেননা এখন যে সকল রাজনীতিক ছুটিতে কানাডার বাইরে গেছেন, তারা কেবল নিজেদের জন্য দুর্নাম বয়ে আনেননি, বরং দলের জন্যও বয়ে এনেছেন। একই সঙ্গে তাদের এই ব্যতিক্রমী হয়ে ওঠার পেছনে আমাদের গণতন্ত্রের সামষ্টিক সহনীয় রাজনৈতিক দর্শনটিও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কারণ, তারা জাতীয় দুর্যোগকে স্বাস্থ্য দুর্যোগ মনে করেননি, বরং মনে করেছেন তাদের অবকাশের উপায়ান্তর।

- Advertisement -

Latest Posts

Don't Miss

Stay in touch

To be updated with all the latest news, offers and special announcements.