নিউ ডেমোক্র্যাটিক নেতা জাগমিত সিং এর দিন শুরু হয় গান শুনে অথবা যোগব্যয়াম করে। এরপর দলের সদস্যদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভাটি সেরে নেন। লন্ডনের ওই মর্মান্তিক ঘটনার এক ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে হাউজ অব কমন্সে বক্তৃতা করতে যাচ্ছিলেন জাগমিত সিং। তবে ঠিক কোন শব্দগুলো ব্যবহার করলে পাশবিক এই হামলাকে বোঝানো যাবে সেটা ঠিক খুঁজে পাচ্ছিলেন না।
শূন্যে হাত ছুড়ে, চিৎকার করে তিনি বলতে থাকেন, আর কত পরিবার সড়কে পিষ্ট হবে? আমরা কিছু একটা করার আগে আর কত পরিবারকে প্রাণ দিতে হবে।
এই বক্তব্য দেওয়ার কিছুক্ষণ আগেই প্রায় অর্ধডজন কর্মীর সঙ্গে জুমে কথা বলা শেষ করেন এনডিপি নেতা এবং সে সময় তিনি ভাষা হারিয়ে ফেলেন। পরে দ্য কানাডিয়ান প্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সে কথা স্মবরণ করেন জাগমিত সিং।
ওই হত্যাকা-ের পরদিন সোমবার মুসলিম বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টগুলোতে চোখ বুলানোর পাশাপাশি তার দলের সদস্যদের কথাও শোনেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন ইসলাম ধর্মাবলম্বীও রয়েছেন।
জাগমিত সিং বলেন, যন্ত্রণার কথাগুলো শুনতে শুরু করেছিলাম এবং আমি নিজেও একই যন্ত্রণা পাচ্ছিলাম। ইসলামোফোবিয়ার সঙ্গে আমার খুব ভালো পরিচয় আছে। কারণ, অনেকবারই আমাকে মুসলিম বলে চিহ্নিত হতে হয়েছে। আমার শিখ টুপিকে ইসলামের চিহ্ন বলে ভুল করা হয়েছে।
এনডিপি নেতা বলেন, অনেকেই বলছেন এই কানাডা তাদের নয়। এর অর্থ কি সেটা আমি বুঝতে পারি। কিন্তু বাস্তবতা হলো এটাই আমাদের কানাডা। আমাদের কানাডা সেই দেশ যে দেশে হিজাব পরে আপনি রাস্তায় হাঁটতে পারবেন না। কারণ, তাহলে আপনি খুন হয়ে যেতে পারেন। আমরা এটা অস্বীকার করতে পারি না। বাস্তবতা হলো আমাদের কানাডা হচ্ছে বর্ণবাদ, সহিংসতা ও আদিবাসীদের গণহারে হত্যার স্থান। আমাদের কানাডা সেই দেশ যেখানে মুসলমানরা নিরাপদ নয়।
ওইদিন সন্ধ্যায় লন্ডনের এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আবারও বার্তা দেন এনডিপি নেতা। সেখানে তিনি বলেন, আমরা ভয় পেয়ে গুটিয়ে যাবো না। গর্বের সঙ্গে আমরা আমাদের টুপি ও হিজাব পরবো। কারণ, আমরা যা তাতে আমরা গর্বিত। সন্ত্রাসকে আমরা জয়ী হতে দেব না।