
সুদের হার বৃদ্ধির ফলে উত্তপ্ত আবাসন বাজার শীতল হবে বলে যারা আশা করেছিলেন শেষ পর্যন্ত তারা হতাশ হতে পারেন বলে মনে করছেন আবাসন বাজারের বিশেষজ্ঞরা। তাদের বিশ্বাস, বাড়ির চাহিদা এতোটাই বেশি এবং এর বিপরীতে সরবরাহ এতোটাই কম যে, সুদের হার দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত করার প্রভাব আবাসন বাজারে খুব একটা পড়বে না।
সেজ রিয়েল এস্টেটের ব্রোকার মিশেল গিলবার্ট বলেন, অতীতে সুদের হার বাড়ানো হলে ক্রেতাদের মধ্যে এই ধারণা তৈরি হতো যে, বাড়ি কেনার সময় এখন নয়। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি উল্টো। আমার কাছে অনেকে আছেন, যারা বাড়ি কিনতে প্রস্তুত।
সুদের হার বৃদ্ধি তার মক্কেলদেরকে বাড়ি কেনা থেকে বিরত রাখতে পারছে না। কারণ, সুেেদর হার এখনও মহামারি-পূর্ববর্তী সময়ে চেয়ে কম আছে এবং বছরের পর বছর তাদেরকে মূল্যবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।
কোভিড-১৯ স্বাস্থ্য সংকট তৈরি হওয়ার পর ব্যাংক অব কানাডার সাবেক গভর্নর স্টিফেন পোলোজ দুই বছর আগে সুদের দশমিক ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনেন। এর সুযোগ নিতে ক্রেতাদের মধ্যে বাড়ি কেনার প্রতিযোগিতা তৈরি হয়। এর ফলে বাড়ির দাম ও বিক্রি দুই-ই বেড়েছে।
টরন্টো ও ভ্যানকুভারে বাড়ির দাম গড়ে ১০ লাখ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এইসব শহরের পার্শ্ববর্তী উপশহর ও গ্রামাঞ্চলেও বাড়ির দাম বেড়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিক্রির জন্য নতুন বাড়ির তালিকাভুক্তি হ্রাস পাওয়ায় রিয়েলটর ও ক্রেতারা কেনার জন্য বাড়ি পাচ্ছেন না, যা বাজারকে বিক্রেতার আরও অনুকূলে নিয়ে গেছে। সরবরাহ সংকটের পাশাপাশি নি¤œ সুদের হার থাকছে না এই ধারণা ক্রেতাদের মধ্যে বাড়ি কেনার আগ্রহ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। গিলবার্ট বলেন, ব্যস্ত সড়কের একটি বাড়ি অপ্রত্যাশিতভাবে ২০ জনের কাছ থেকে কেনার প্রস্তাব এসেছে।
রিয়েল এস্টেট লিস্টিং সাইট ২০১৭ সালের শুরু থেকে ২০১৯ সালের শেষ পর্যন্ত টরন্টোতে বাড়ির গড় মূল্য ও মাসিক বিক্রির পরিমাণের তুলনামূলক চিত্র দিয়েছে। ওই সময়ে সুদের হার পাঁচগুন বেশি ছিল। বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৮ সালে বাড়ি বিক্রি হয়েছিল ৭৮ হাজার ১৮টি বাড়ি, সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে যা সর্বনিম্ন। তবে সুদের হার বৃদ্ধির পরও গড় মূল্য খুব সামন্যই পরিবর্তিত হয়েছিল। মাসিক সবচেয়ে বড় মূল্যপতন দেখা যায় ২০১৮ সালের নভেম্বরে নতুন সুদের হার ঘোষণার পর। ওই সময় বাড়ির দাম কমে যায় ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ। তবে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাড়ির দাম ৪ শতাংশের বেশি বেড়ে যায়। ২০১৭ ও ২০১৯ সালেও মাসিক মূল্যবৃদ্ধি ও হ্রাসের প্রবণতা প্রায় একই ছিল। যার অর্থ হলো মৌসুমভেদে বাড়ির দামে সামান্য হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে।