
মহামারি সংক্রান্ত বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে এখন কোভিড-১৯ ভাইরাসের সঙ্গে বাস করতে শেখার সময় বলে বিশ^াস করেন ৩০ শতাংশ কানাডিয়ান। তবে ৪০ শতাংশ আবার বিধিনিষেধ শিথিল চান অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে। লেজারের এক সমীক্ষায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনগণের মধ্যে একটা পর্যায়ের অবসন্নতা যে আছে লেজারের সমীক্ষার ফল সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। তাই বলে মহামারির কারণে ক্লান্ত হওয়ার অর্থ এই নয় যে ঝুঁকি দূরীভুত হয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অব আলবার্টার রোগতত্ত্ববিদ রোমান পাবাইয়ো বলেন, কোভিড-১৯ এর ব্যাপারে আমাদের আরও টেকসই মনোভাব গ্রহণ করতে হবে। তার অর্থ এই নয় যে, সতর্কতাগুলো বাদ দিতে হবে। সতর্কতা অবলম্বন প্রয়োজন বলে আমি এখনও মনে করি এবং বিধিনিষেধগুলো প্রত্যাহার করা উচিত বিজ্ঞান ও জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্যের ভিত্তিতে।
লেজারের সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৪৩ শতাংশ কানাডিয়ান দ্রুত বিধিনিষেধ প্রত্যাহার চান না। তবে ২৯ শতাংশ বিধিনিষেধ প্রত্যাহার চান। তাদের ধারণা হচ্ছে, তারা ভ্যাকসিনেটেড এবং ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট তুলনামূলক কম মারাত্মক। বাকি ২৮ শতাংশের মধ্যে অর্ধেক এ নিয়ে উদ্বেগ এবং বাকি অর্ধেক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের মধ্যে মোটেও স্বস্তির কিছু দেখছেন না সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ১৪ শতাংশ কানাডিয়ান এবং ১৪ শতাংশ বাধ্যবাধকতার বিরোধিতা করে বলেছেন, এখনই সরকার তাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিক।
৪ থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি অনলাইনে ১ হাজার ৫৪৬ জন কানাডিয়ানের ওপর সমীক্ষাটি চালানো হয়। সব বিধিনিষেধ সরকারের প্রত্যাহার করা উচিত কিনা সমীক্ষায় এই প্রশ্ন করা হলে ৫৮ শতাংশ ‘না’ সূচক উত্তর দেন। ‘হ্যা’ মূচক উত্তর দেন ৩২ শতাংশ কানাডিয়ান। জানুয়ারিতে যেখানে ২০ শতাংশ এবং গত বছরের জুনে ২৬ শতাংশ কানাডিয়ান সব বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছিলেন।
ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোর বৈশি^ক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. ফাহাদ রাজ্জাক বলেন, কানাডিয়ানদের হাপিয়ে উঠার বিষয়টি আমি বুঝতে পারি। কিন্তু নীতি নির্ধারকদের উচিত বিধিনিষেধ পুরোপুরি প্রত্যাহারের আগে রোগতাত্ত্বিক পরিমাপগুলোর দিকে মনোযোগ দেওয়া। মহামারির এবারের ঢেউ কানাডায় আক্রান্ত, হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্যে ঘাটতি আছে।
বাধ্যবাধকতার সবচেয়ে বেশি বিরোধিতা করেছেন আলবার্টার বাসিন্দারা। মহামারির বর্তমান অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আলবার্টার ২৪ শতাংশ বাসিন্দা। অন্যদিকে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আটলান্টিক কানাডার ২২ শতাংশ নাগরিক।