
মার্কিন সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার চেষ্টার সময় বরফে জমে মারা যাওয়া চার ভারতীয় মরদেহের সৎকার কানাডাতেই করা হয়েছে। অমৃতভাই ভাকিল নামে ওই ব্যক্তি বলেন, ওই দম্পতি ও তাদের দুই সন্তানের মরদেহ দেখা সম্ভব নয় বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তাছাড়া মরদেহগুলো দেশে ফেরত নেওয়া বেশ ব্যয়সাপেক্ষও।
তিনি বলেন, একসঙ্গে চারটি মরদেহ দেখার পর বাবা-মায়ের কী অবস্থা হবে কল্পনা করতে পারেন? তারা চেয়েছেন, মৃতদেহগুলোর সৎকার কানাডাতেই হোক।
দ্য কানাডিয়ান প্রেস জানায়, রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ ও কূটনীতিকরা বৃহস্পতিবার মারা যাওয়া চার ভারতীয়র নাম প্রকাশ করেছে। তারা হলেন ৩৯ বছর বয়সী জগদীশ প্যাটেল ও তার স্ত্রী ৩৭ বছর বয়সী বৈশালিবেন প্যাটেল এবং তাদের ১১ বছরের কন্যা বিহঙ্গী প্যাটেল ও তিন বছরের ছেলে ধার্মিক প্যাটেল।
গুজরাটের দিঙ্গুচা গ্রামের এ বাসিন্দারা ১২ জানুয়ারি টরন্টো পৌঁছান। এর সাতদিন পর সীমান্ত থেকে কয়েক মিটার দূরে বরফে জমে যাওয়া তাদের মৃতদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় সীমান্তের ওপারে এক মার্কিন নাগরিককে গেপ্তারের পর তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্রের একজন সদস্য।
মার্কিন আদালতে দাখিল করা নথিতে বলা হয়েছে, ফ্লোরিডার ডেল্টোনার বাসিন্দা স্টিভ শ্যান্ড ১৯ জানুয়ারি সীমান্তের দক্ষিণ অংশ থেকে দুই ভারতীয়কে নিয়ে একটি গাড়ি চালাচ্ছিলেন। এর পরপরই আরও পাঁচ জনকে বরফের ওপর দিয়ে গাড়ির দিকে হেঁটে যেতে দেখা যায়। সীমান্ত কর্মকর্তাদের তারা বলেন, ঠান্ডার মধ্য দিয়ে তারা ১১ ঘণ্টা হেঁটে এখানে পৌঁছেছেন এবং আরও চারজন রাতে তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। এর মধ্যে একজন বলেন, কানাডার একটি ভুয়া স্টুডেন্ট ভিসার জন্য তিনি বড় অংকের অর্থ পরিশোধ করেছেন এবং সীমান্ত পাড়ি দিয়ে শিকাগোতে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাবেন।
এ ঘটনায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, অটোয়াতে ভারতের দূতাবাস ও টরন্টোর কনস্যুলেট জেনারেল কানাডিয়ান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ ব্যাপারে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
গুজরাট পুলিশের মহাপরিচালক অনীল প্রথম বলেন, তদন্তের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন তিনি। আমার বিশ^াস প্যাটেল পরিবার স্থানীয় ট্রাভেল এজেন্টের মাধ্যমে কানাডার ভিসা সংগ্রহ করেছিলেন।
দিঙ্গুচা থেকে টেলিফোনে ভাকিল বলেন, কানাডায় পাওয়া মৃতদেহগুলো তাদের স্বজনদের কিনা এ নিয়ে বেশ কয়েকদিন উদ্বেগে ছিল পরিবারটি। চারজনের কানাডায় যাওয়ার বিষয়টি পরিবারের সদস্যরা জানতেন। কিন্তু কেউই সেখানে পৌঁছাতে পারেননি। পরিবারটিকে এখন কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে।