কোভিড-১৯ মহামারি মহামন্দার পর কানাডার অর্থনীতিতে সবচেয়ে মন্দা ডেকে আনলেও শীর্ষস্থানীয় ১০০ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বেতনে এর কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। ২০২০ সালে তারা এ যাবৎকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেতন পেয়েছেন।
কানাডিয়ান সেন্টার ফর পলিসি অল্টারনেটিভসের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ডেভি ম্যাকডোনাল্ড বলেন, মহামারি অধিকাংশ কানাডিয়ান বিশেষ করে কর্মহীনদের জন্য খারাপ সময় হিসেবে দেখা দিলেও কানাডার ধনী প্রধান নির্বাহীদের জন্য তেমনটা ছিল না।
২০২০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির উচ্চ বেতনের ১০০ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কি পরিমাণ আয় করেছেন সে সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছেন ম্যাকডোনাল্ড। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের গড় আয় এরই মধ্যে সাধারণ কানাডিয়ানদের সারাবছরের আয়কে ছাপিয়ে গেছে। ২০২০ সালে একাধিক লকডাউন ও অফিস-আদালত জোর বন্ধ রাখার কারণে অধিকাংশ কানাডিয়ানের কর্মঘণ্টা হ্রাস পায় অথবা পুরোপুরি তারা কর্মহীন হয়ে পড়েন। এই সময়ে সর্বোচ্চ বেতনপ্রাপ্ত ১০০ প্রধান নির্বাহী আয় করেছেন ১ কোটি ৯ লাখ ডলার করে। তবে এর চেয়ে বেশি আয় তারা করেছিলেন ২০১৮ সালে। সেবার তাদের আয় ছিল গড়ে ১ কোটি ১৮ লাখ ডলার। তবে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে তাদের গড় আয় ৯৫ হাজার ডলার বেড়েছে।’
তাদের এই আয়ের ৮২ শতাংশ এসেছে বোনাস হিসেবে। এর মধ্যে নগদ অর্থ যেমন আছে একইভাবে আছে শেয়ারও।
ম্যাকডোনাল্ড বলেন, তাদের কাজে অন্যরকম সফল ছিলেন এই দাবিতে প্রধান নির্বাহীরা তাদের বোনাসকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করে থাকেন। কিন্তু অর্ধেক প্রধান নির্বাহীই সেইসব কোম্পানিতে কাজ করেছেন যারা কানাডা ইমার্জেন্সি ওয়েজ সাবসিডির মতো সরকারের আর্থিক সহায়তা পেয়েছে। অথবা বোনাস ফর্মুলা সমন্বয়ের কারণেই বোনাস পেয়েছেন তারা।
সর্বোচ্চ বেতনপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহীরা ২০২০ সালে সাধারণ কর্মীর তুলনায় ১৯১ গুন বেশি আয় করেছেন। যদিও ২০১৯ সালে সাধারণ কর্মীদের তুলনায় এসব প্রধান নির্বাহী ২০২ গুন বেশি আয় করেছিলেন। তবে ২০২০ সালে শীর্ষ প্রধান নির্বাহী ও সাধারণ কর্মীদের মধ্যে আয়ের যে তফাৎ তা ছয় বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ।
সাধারণ কর্মীরা বেশি বেতন পেয়েছেন এবং সেজন্যই ব্যবধান কমে এসেছে বলে মনে করেন না ম্যাকডোনাল্ড। বরং, বছরের কোনো এক সময় সবচেয়ে কম বেতনপ্রাপ্ত বিপুল সংখ্যক কর্মীকে ছাঁটাই করায় তাদের বেতনের বিষয়টি উল্লেখ না থাকার কারণেই এ ব্যবধান কমে এসেছে।