এনডিপি নেতা জাগমিত সিংয়ের মূল্যায়ন পুরোপুরি নির্ভুল। এই মুহূর্তে নির্বাচন একেবারেই অপ্রয়োজনীয়। তবে একটা জায়গায় জাগমিত সিং তার বিশ^াসে বড় ভুল করে ফেলেছেন। সেটা হলো নির্বাচনের অনুরোধ এলে কানাডার নব নিযুক্ত গভর্নর জেনারেল কিছু একটা হয়তো করবেন।
এই ফলে নির্বাচনের সম্ভাবনা যখন জোরালো হচ্ছে তখন নতুন গভর্নর জেনারেল মেরি সিমনের প্রতি জাগমিত সিং আহ্বান জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর তরফ থেকে এ ধরনের কোনো অনুরোধ এলে তিনি যেনো তা প্রত্যাখ্যান করেন। সিংয়ের মতে, সংখ্যালঘু হওয়ার পরও সংসদ খুবই ভালোমতো কাজ করছে এবং এই মুহূর্তে কানাডিয়ানদের নির্বাচনের মাঠে নামিয়ে দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
যুক্তিটা যথার্থই। তবে এ দিয়ে সাংবিধানিক সংকট অতিক্রম করার সুযোগ সেভাবে নেই। প্রয়োজন হলে জাস্টিন ট্রুডো ও তার দল লিবারেল পার্টি আগাম নির্বাচন দিতেও প্রস্তুত। এরপর সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব কানাডিয়ানদের ওপর। বিষয়টির সমাধান করতে হবে গণতান্ত্রিকভাবেই।
জাগমিত সিং আরও বলেছেন, কানাডায় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিন আইনেই নির্ধারণ করে দেওয়া আছে এবং সেটা দুই বছর অন্তর। তবে এখানে লক্ষণীয় যে, গভর্নর জেনারেলের সংসদ ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা প্রভাবিত করার মতো কিছু নেই এই আইনে।
লিবারেল সরকার আইনটির প্রতি অসম্মান করছে বলে কোনো ধারণাও যদি কানাডিয়ানদের মধ্যে জন্ম নেয় তাহলেও তার জন্য তাদেরকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনার সর্বোত্তম সুযোগ হলো নির্বাচন। ২০১৫ সালে আলবার্টার ক্ষমতাসীন সরকারের ক্ষেত্রেও এমনটাই ঘটেছিল।
এটা সত্যি যে, কানাডায় রানীর প্রতিনিধি হিসেবে সংসদ ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা গভর্নর জেনারেলের রয়েছে। তবে তার আগে তাকে রিডো হলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হবে। এটাই সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত রেওয়াজ এবং নতুন গভর্নর জেনারেলও হয়তো সেটাই করবেন।
ওয়েস্টমিনিস্টার ব্যবস্থার বিশেষজ্ঞ ও কার্লেটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ফিলিপ লাগাসে বলেন, কোনো নির্বাচন যদি সম্প্রতি অর্থাৎ ৯-১২ মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে এবং সংসদের পার্টিগুলোর মধ্যে আরেকটি টেকসই সরকার থাকে তাহলে সংসদ ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হতে পারে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক সামনে এনেছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও ইউনিভার্সিটি অব ওয়াটারলুর অধ্যাপক এমেট ম্যাকফারলেন। তিনি বলেন, গভর্নর জেনারেলের যে নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় চরিত্র সেটি নষ্ট করাটা হবে মৌলিকভাবেই অগণতান্ত্রিক।