শ্রমিক সংকটের কারণে কানাডার অনেক কোম্পানি কর্মীদের বাধ্যতামূলক ভ্যাকসিন গ্রহণের পরিবর্তে নিয়মিত কোভিড পরীক্ষাকে গুরুত্ব দিচ্ছে। অনেক কোম্পানি আবার কর্মীদের বাধ্যতামূলক ভ্যাকসিনেশনের যে ঘোষণা দিয়েছিল তা থেকে সরে আসছে। ওমিন ভ্যারিয়েন্টের কারণে সংক্রমণ বাড়তে থাকার মধ্যেই এ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কানাডার কোম্পানিগুলো।
সরকারি কর্মীদের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনেশন সংক্রান্ত সবচেয়ে কঠোর নীতি নিয়েছে ট্রুডো সরকার। ভ্যাকসিন না নেওয়ায় এরই মধ্যে এক হাজারের বেশি কর্মীকে বেতন ছাড়াই ছুটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আরও কয়েক হাজার একই পরিণতির মুখে রয়েছেন।
এয়ারলাইন্স, পুলিশ বাহিনী, স্কুল বোর্ড এমনকি কানাডার শীর্ষ পাঁচ ব্যাংকও কঠোর ভ্যাকসিন নীতি অবলম্বনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পরবর্তীতে তাতে নমনীয়তা দেখা গেছে, বিশেষ করে শ্রমিক সংকটের কারণে।
চলতি বছরের এখন পর্যন্ত কানাডায় কর্মখালী দ্বিগুনে পৌঁছেছে। বাধ্যতামূলক ভ্যাকসিনেশন শুন্যপদ পূরণ কঠিন করে তুলতে পারে। সেই সঙ্গে বেতন বৃদ্ধির চাপ তৈরি করতে পারে, দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চে থাকা মূল্যস্ফীতিকে আরও উস্কে দিতে পারে।
কানাডিয়ান ফেডারেশন অব ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিজনেসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড্যান কেলি বলেন, বাধ্যতামূলক ভ্যাকসিনেশনের কারণে কর্মী খুঁজে পাওয়া এরই মধ্যে কঠিন হয়ে পড়েছে। এর ফলে সম্ভবত আপনি আরও ২০ শতাংশ কর্মী হারাতে পারেন।
ভ্যাকসিন না নেওয়া ব্যক্তিদের নিয়োগ করার মধ্যে গোপন ঝুঁকিও আছে। কোম্পানিগুলো সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং ভ্যাকসিন গ্রহীতারা ভ্যাকসিন না নেওয়া কর্মীদের সঙ্গে কাজ করতে অস্বস্তি প্রকাশ করতে পারেন।
মন্ট্রিয়লভিত্তিক সুপ ও সস প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান আট লুডা ফুডসের প্রেসিডেন্ট রবার্ট এইসার বলেন, তার প্রতিষ্ঠানে ১৪টি উন্মুক্ত চাকরি আছে এবং ভ্যাকসিন গ্রহণ বাধ্যতামূলক নয়। নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন বাধ্যতামূলক করার কোনো পরিকল্পনাও তাদের নেই। শ্রমিক পুল আমি ছেঁটে ফেলতে চাই না। এমনিতেই এটা ছোট। চাহিদা পূরণে আমরা মানুষকে আকৃষ্ট করতে চাই। আমরা নান করলে আমাদের প্রতিযোগীরা করবে।
শুক্রবার প্রকাশিত উপাত্ত অনুযায়ী, নভেম্বরে কানাডার শ্রমবাজারে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭০০ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি প্রাপ্য কর্মী ও শুন্যপদের মধ্যেও একটা ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছে। চাকরির সুযোগ মহামারি পূর্ববর্তী অবস্থাকে ছাপিয়ে গেছে।
টরন্টো-ডমিনিয়ন ব্যাংক এবং ব্যাংক অব মন্ট্রিয়ল উভয়েই ভ্যাকসিন নীতি নমনীয় করেছে। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে যারা ভ্যাকসিন নেননি তাদের নিয়মিত কোভিড পরীক্ষার ভিত্তিতে কাজের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
কানাডায় এখন প্রাপ্ত বয়স্ক ৮৬ শতাংশ নাগরিক উভয় ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন। তবে ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে এ হার ৮০ শতাংশ। গত সপ্তাহে কানাডায় ওমিক্রনে আক্রান্ত ১৫ জন কোভিড রোগী সনাক্ত হয়েছেন।