
অবশেষে প্রকাশিত হলো ‘মিস্টার প্রেসিডেন্ট’। আমার হাতে এখনো কোন কপি আসেনি তবে কানাডার ডিস্ট্রিবিউশনের দায়িত্ব নিয়েছেন মনির বাবু। তাঁর সাথে যোগাযোগের নম্বর 416 648 7801
নন্দিতা প্রকাশের WhatsApp নম্বর 01791117895 এ যোগাযোগ করেও বইটি সংগ্রহ করা যেতে পারে।
স্বাধীনতা সংগ্রামের ক্রান্তি লগ্নে দেশের অভ্যন্তরীণ জনগোষ্ঠীর সাথে সাথে প্রবাসী বাঙালিরা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে যে শক্তি সঞ্চয় করেছিল তা বিশ্ব ইতিহাসে দুর্লভ ঘটনা। ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে তখন বিপুল বিস্তার ঘটিয়ে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পরেছিল বাংলাদেশ। বর্তমান প্রজন্মের একটি অংশ হয়তো জানে না যে ছাত্রদের পাশাপাশি শিক্ষকদের মধ্যেও অনেকে জড়িত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধে। তাদেরই একজন শিক্ষক, প্রাতিষ্ঠানিক পদের সর্বোচ্চ আসনে থেকেও স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় পথে পথে ঘুরেছেন মুক্তিযুদ্ধের পোস্টার গলায় বেঁধে। তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর শ্রদ্ধেয় আবু সাঈদ চৌধুরী। আমার এই উপন্যাস সেই মহান ব্যক্তিকে নিয়ে লেখা। তিনিই ‘মিস্টার প্রেসিডেন্ট’।
প্রবাসে স্বাধীনতা আন্দোলন চালিয়ে যেতে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী যাদের সাথে কথা বলতেন বা দেখা করেছিলেন তাঁদের অধিকাংশই দায়িত্বশীল পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং এদের ছিল সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা, অথবা সমপর্যায়ের অন্য প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের প্রভাবিত করার যোগ্যতা। তাই আবু সাঈদ চৌধুরীর মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা ছড়িয়ে যেতে শুরু করে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে। যুদ্ধকালীন নয় মাসে পাকিস্তানী সৈন্যদলের দখলকৃত বাংলাদেশের কোথাও বঙ্গবন্ধুর ছবি দেখা যেত না। বঙ্গবন্ধুর ছবি রাখা মানে নির্ঘাত বুলেটের আঘাতে মৃত্যু। তখন বিশ্বের পথেঘাটে বঙ্গবন্ধুর ছবি হাতে নিয়ে প্রবাসীরাই মিছিল মিটিং করতো। গণহত্যা বন্ধ, শরণার্থীদের সাহায্য পাঠানো, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যুদ্ধের সরঞ্জাম জোগাড় করা, বাংলাদেশের স্বীকৃতি এসব কাজে প্রবাসীরা রাতদিন পরিশ্রম করেছে। এ কথা সকলেই জানে যে, জাতির পিতাকে বন্দী দশা থেকে মুক্ত করতে না পারলে আমাদের বিজয়ের সাধ কখনো পূর্ণ হতো না। তাই তাঁকে মুক্ত করতে প্রবাসীদের ভূমিকার কথা জানাও অপরিহার্য। ‘মিস্টার প্রেসিডেন্ট’ পড়লে বুঝা যাবে ১৯৭১ সালে আন্তর্জাতিক মহল কিভাবে আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল এবং প্রবাসীদের কর্ম দক্ষতায় কিভাবে দৃশ্যমান হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের চুম্বক অংশ, মুক্তিযুদ্ধ।
‘মিস্টার প্রেসিডেন্ট’ পড়ার পর যদি কেউ মনে করেন, দেশ হতে হাজার হাজার মাইল দূরে, বৈরী আবহাওয়া এবং ভিন্ন আইনী পরিবেশে বসবাস করা সত্ত্বেও যে সমস্ত ব্যক্তি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য লড়াই করেছেন তারাও স্বাধীনতা সংগ্রামের এক একজন বীর সৈনিক তবেই আমার লেখা সার্থক হয়েছে বলে মনে করবো।
‘মিস্টার প্রেসিডেন্ট’ প্রকাশ করতে রাজি হওয়ায় বি ভি রঞ্জন ও তার প্রকাশনী সংস্থা নন্দিতা প্রকাশের প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা। ‘মিস্টার প্রেসিডেন্ট’ ধারাবাহিকভাবে সাপ্তাহিক বাংলামেইলে প্রকাশিত হচ্ছে। আপনাদের আগ্রহ ও সহযোগিতা পেলে মিস্টার প্রেসিডেন্ট হয়তো কিছু মানুষের হাতে গিয়ে পৌঁছুবে।