
উচ্চ মূল্য ও অযৌক্তি কোভিড-১৯ পরীক্ষা এবং শিশুদের জন্য বৈষম্যমূলক কোয়ারেন্টিন নীতি পরিবারগুলোর ভ্রমণকে কঠিন করে তুলছে বলে মন্তব্য করেছেন কানাডিয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম রাউন্ডটেবিলের সদস্যরা। এমনকি প্রাপ্ত বয়স্করা পুরোপুরি ভ্যাকসিনেটেড হওয়া সত্ত্বেও।
নাগরিকত্ব ও ভ্যাকসিনেশন স্ট্যাটাস নির্বিশেষে পাঁচ বছরের বেশি বয়সী সব ভ্রমণকারীকেই কানাডায় প্রবেশের আগে পিসিআর কোভিড-১৯ পরীক্ষায় নেগেটিভ হওয়া বাধ্যতামূলক। কানাডার বিধানে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের কোনো সুযোগ নেই এক্ষেত্রে। প্রতিটি পিসিআর পরীক্ষায় খরচ পড়ে ১৫০ থেকে ৩০০ ডলার, পরিবারগুলোর জন্য যা ব্যয়বহুল।
এছাড়া ভ্রমণশেষ বাড়ি ফেরার ১৪ দিন পর্যন্ত শিশুরা স্কুল, ক্যাম্প বা ডেকেয়ারেও অংশ নিতে পারবে না। তা সে জনবহুল স্থানেই হোক অথবা গণপরিবহনেই হোক।
কানাডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পেরিন বিটি একে অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এর কোনো মানে হয় না।
রাউন্ডটেবিলের কো-চেয়ারের দায়িত্বও পালন করছেন পেরিন বিটি। গত বৃহস্পতিবার ট্রাভেল ও ট্যুরিজম শিল্পের সদস্যদের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে পরিবারগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক ভ্রমণকে বাধা প্রদানকারী অপ্রয়োজনীয় ও অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রত্যাহারের জন্য ফেডারেল সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ব্রায়ান মালরোনির মন্ত্রিসভায় ১৯৮৯ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন বিটি। তিনি বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা হওয়া উচিত জনগণের উভয় ডোজ ভ্যাকসিনের বিষয়টি নিশ্চিত করা। কানাডায় আসা কেউ যদি উভয় ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণের বিষয়টি প্রমাণ করতে পারেন তাহলে সংক্রমণের কম ঝুঁকির মানদ- তিনি পূরণ করেছেন বলে ধরে নেওয়া যায়।
অটোয়াতে বসবাসকারী দুই সন্তানের পিতা ডেভিড শোয়ার্টজ বলেন, এই মুহূর্তে তার পরিবারের কাছে ভ্রমণের বিষয়টি ধরাছোঁয়ার বাইরে।
যদিও এই শীতে পরিবার নিয়ে টেক্সাসে তার এক আত্মীয়ের ৫০তম বিবাহবার্ষিকীতে অংশ নেওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু সবার মলিকিউলার পরীক্ষা করতে গেলে ভ্রমণ বাবদই ৮০০ থেকে ১ হাজার ডলার খরচ হয়ে যাবে। তাছাড়া ভ্রমণ শেষে দুই শিশুকে ১৪ দিনের জন্য বাড়ির বাইরে রাখাও পরিবারটির পক্ষে সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, কোভিড পরীক্ষায় নেগেটিভ হলে ভ্রমণ শেষে শিশুদের স্কুলে ফেরার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। পরিবার হিসেবে মহামারি মোকাবেলায় আমাদের পক্ষ থেকে করণীয় সবকিছুই আমরা করেছি। আমরা ভ্যাকসিন নিয়েছি, বাড়িতে থেকেছি ও ওই ধরনের পারিবারিক অনুষ্ঠানগুলোতেও অংশ নিতে পারিনি। এখন এসে সরকারের কাছে আমাদের আবেদন থাকবে, দয়া করে নিয়মগুলোতে পরিবর্তন আনুন, যাতে করে করে আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারি।