কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ক্রয়ে যেসব কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে তাদের সবাইকেই কানাডার এর উৎপাদনের প্রস্তাব দিয়েছিল দেশটি। তবে কেউই এ প্রস্তাবে রাজি হয়নি বলে জানিয়েছেন কানাডার ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রী অনীতা আনান্দ।
হাউজ অব কমন্সের শিল্প বিষয়ক কমিটিকে তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী শীর্ষস্থানীয় সব কোম্পানির কাছেই একাধিকবার তুলে ধরেছি। তারাও কানাডায় উৎপাদন সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখেছে। এরপর তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, চুক্তির সময় অর্থাৎ আগস্ট-সেপ্টেম্বরে কানাডার উৎপাদন সক্ষমতা মূলধনী বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত ছিল না।
যদিও অনেক কোম্পানিই ভ্যাকসিন উৎপাদনে অংশীদার খুঁজে নিয়েছে। মডার্না সুইজারল্যান্ডের ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী লোনজার সঙ্গে ১০ বছরের চুক্তি করেছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকাও একাধিক দেশের সঙ্গে উৎপাদন চুক্তি করেছে। চীন, ব্রাজিল, মেক্সিকো, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া এসব দেশের মধ্যে অন্যতম।
কানাডার নাম এই তালিকায় নেই কেন? এনডিপি এমপি ডন ডেভিসের এ প্রশ্নের উত্তরে অনীতা আনান্দ বলেন, গত আগস্টে ব্যক্তিগতভাবে আমি অ্যাস্ট্রানেকার কাছে প্রশ্নটি তুলেছিলাম।
বিষয়টি স্বীকার করে অ্যাস্ট্রাজেনেকার একজন পরিচালক কার্লো মাস্ট্রাঙ্গেলা বলেন, কানাডা সরকারের সঙ্গে আলোচনার সময় আমরা দেশটির উৎপাদন সামর্থ্য ও এজেডডি১২২২ ভ্যাকসিন উৎপাদনের কারিগরী সক্ষমতা আছে কিনা সেটি পর্যালোচনা করে দেখেছি। সরকার ও আমাদের কারিগরী বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা শেষে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, সময়মতো কানাডায় ভ্যাকসিন সরবরাহের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হল সরবরাহ ব্যবস্থায় বিনিয়োগ বাড়ানো, আগে থেকেই যেটি বিদ্যমান।
তবে মেরিল্যান্ডভিত্তিক কোম্পানি নোভাভ্যাক্স শেষ পর্যন্ত কানাডার মন্ট্রিয়লে ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিলের প্ল্যান্টে ভ্যাকসিন উৎপাদনে রাজি হয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো গত সপ্তাহে ঘোষণাটি দিয়েছেন।
এরপর নোভাভ্যাক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্ট্যানলি ইর্ক এক বিবৃতিতে বলেন, জরুরিভিত্তিতে নিরাপদ ও কার্যক্রর ভ্যাকসিন সরবরাহে আমাদের যে চেষ্টা কানাডার সঙ্গে চুক্তিটি সেক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। কানাডায় কোম্পানির উপস্থিতি বাড়াতে সরকার ও নোভাভ্যাক্সের একসঙ্গে কাজ করার বিষয়টিও উল্লেখ আছে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকে।
তবে ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিলের নতুন অবকাঠামোর নির্মাণ আগামী গ্রীষ্মের আগে সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা কম। সেক্ষেত্রে আগামী ফলের শেষভাগের আগে এখান থেকে ভ্যাকসিন পাওয়ার সুযোগ সে অর্থে নেই।