মডার্না ও ফাইজার-বায়োএনটেকের পর অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন শুক্রবার অনুমোদন দিয়েছে হেলথ কানাডা। এমন এক সময় ভ্যাকসিনটির অনুমোদন দেওয়া হলো যখন সংক্রমণের সংখ্যা প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে ৭৫ শতাংশ বেশি।
ভ্যাকসিনটির অনুমোদন দেওয়ার পর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, আমরা বসন্তের দিকে এগোচ্ছি এবং দ্রুত গতিতে ভ্যাকসিনের সরবরাহ আসতেই থাকবে।
সংক্রমণ ও হাসপাতালে ভর্তি কোভিড রোগীর সংখ্যা সম্প্রতি কমে এলেও কিছু অঞ্চলের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন। কানাডার প্রধান জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তেরেসা ট্যাম বলেন, সমগ্র কানাডায় যুক্তরাজ্যে সনাক্ত ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৬৪ জনে পৌঁছেছে। দুই সপ্তাহ আগেও সংখ্যাটি ছিল ৪২৯। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকায় সনাক্ত ভ্যারিয়েন্টেও আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ এবং ব্রাজিলে সনাক্ত ভ্যারিয়েন্টে ২ জন।
ডা. তেরেসা ট্যাম বলেন, দৈনিক কোভিড-১৯ এ সংক্রমণের সংখ্যা গত বসন্তের চেয়ে ৭৫ শতাংশ বেশি আছে। এছাড়া অন্টারিও, আলবার্টা ও ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় দৈনিক সংক্রমণ গত সপ্তাহের চেয়ে ৮ থেকে ১৪ শতাংশ বেশি রয়েছে।
নতুন ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি সংক্রমণের প্রধানতম মাধ্যম হয়ে ওঠার ঝুঁকির কথা বললেও ভ্যাকসিনেশনের অগ্রগতি আশা জোগাচ্ছে বলে জানান তেরেসা ট্যাম। তিনি বলেন, কানাডাজুড়ে এখন পর্যন্ত ১৭ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। উচ্চমাত্রায় এর কার্যকারিতার ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো শুক্রবার সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে মিসিসগার ভেরিটি ফার্মাসিউটিক্যালসের অংশীদারিত্ব ঘোষণা করেন। এই দুই প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে। এছাড়া অ্যাস্ট্রাজেনেকার কাছ থেকে ২ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন আগেই নিশ্চিত করেছে কানাডা।
ট্রুডো বলেন, ভ্যাকসিনেশনের গতি বাড়ায় অনেক প্রদেশ এই কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা বাড়িয়েছে। ডেন্টিস্ট, মিডওয়াইভ, ফার্মেসি টেকনিশিয়ান ও অবসারপ্রাপ্ত নার্সদেরও ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচিতে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
কানাডার জনস্বাস্থ্য বিভাগের ডেপুটি প্রধান ডা. হাওয়ার্ড নিয়ু বলেন, নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ হ্রাস ও তৃতীয় ঢেউ এড়ানোর উপায়গুলোর একটি হচ্ছে ভ্যাকসিনেশন। সংক্রমণ হ্রাসে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা ও দেখা-সাক্ষাৎ কমানোও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
অন্টারিও সরকারকে পরামর্শ প্রদানকারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ নাগাদ মোট সংক্রমণের ৪০ শতাংশ হবে নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারণে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার অন্টারিওতে নতুন করে ১ হাজার ২৫৮ জন কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন এবং ভাইরাসটির কারণে মারা গেছেন ২৮ জন। অন্টারিওতে নতুন আক্রান্তদের মধ্যে টরন্টোর বাসিন্দা ৩৬২, পিল রিজিয়নের ২৭৪ ও ইয়র্ক রিজিয়নের ১০৪ জন।