মহামারিতে শিশুদের মধ্যে ইটিং ডিজঅর্ডার (অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে মানসিক সমস্যা) নজিরবিহীন সংকট তৈরি করছে বলে জানিয়েছেন সিককিডস হসপিটালের প্রেসিডেন্ট ও সিইও ডা. রোনাল্ড কোহন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমাদের ইটিং ডিজঅর্ডার ইউনিটে রোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে, যা আগে কখনো দেখা যায়নি।
গবেষকরা বিষয়টি নিয়ে পদ্ধতিগত গবেষণা শুরু করলেও ডা. কোহন যুক্তরাষ্ট্রে তার সহকর্মীদের সঙ্গেও এ নিয়ে আলাপ করেছে। আলাপে জানতে পেরেছে, সমস্যাটি শুধু কানাডার শিশুদের নয়, যুক্তরাষ্ট্রও একই সমস্যায় ভুগছে। তিনি বলেন, সেই মে মাস থেকেই আমি বলে আসছি, এই মহামারিতে শিশুদের কথা কেউ শুনছে না।
এই মুহূর্তে শিশুরা যে নজিরবিহীন চাপে রয়েছে সে বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করেন এই শিশু বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, আমার মনে হয়, এই মহামারিতে মানসিক যে চাপ সেটি আমরা কেউ উপলব্ধি করতে পারছি না। কারণ শিশুরা মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ার সামনে উন্মুক্ত হয়ে পড়ছে এবং খাবার টেবিলে এ-সংক্রান্ত আলোচনার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে তাদের ওপর।
তবে বর্তমানে যা কিছু ঘটছে তা থেকে শিশুদের আড়ালে রাখার কোনো পরামর্শ ডা. কোহন দেননি, বিশেষ করে তারা যদি এ নিয়ে জানতে আগ্রহী হয়। অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মহামারি নিয়ে শিশুদের সামনে আপনারা খোলা মনে আলোচনা করুন। একই সঙ্গে এটাও মনে রাখবেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে উদ্বেগ অতিরঞ্জিতভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে তা স্বাস্থ্যকর নয়।
যুক্তরাজ্যের শিশু বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগের পর ডা. কোহন বলেন, করোনাভাইরাসের নতুন ধরণটি সম্পর্কে আমরা যখন জানতে পেরেছিলাম তখন সত্যিই আমরা খুব উদ্বিগ্ন ছিলাম। কিন্তু আমি আপনাদের বলতে পারি, বিষয়টি মোটেও তেমনটি নয়। যদিও ভাইরাসটির সংক্রমণ ক্ষমতা অনেক বেশি।
বিদ্যালয়গুলো এখনও খুলে রাখার পক্ষে মত দিয়েছে সিককিড। ডা. কোহন এ ব্যাপারে বলেন, আমাদের শিক্ষকরা এখন পর্যন্ত অসাধারণ কাজ করেছেন। এখন আমাদের প্রয়োজন টেস্ট, ট্রেস, আইসোলেশন শক্তিশালী করা। বিদ্যালয়গুলোতে সংক্রমণ কতটা? এ প্রশ্নের উত্তর আমাদের কাছে নেই।
কোহন বলেন, শিশুরা মারাত্মক সংক্রমণের শিকার হচ্ছে না। পাশাপাশি ১০ বছর ও তার কম বয়সী শিশুরা বয়স্কদের তুলনায় ভাইরাসটি ছড়াচ্ছেও কম। দিনশেষে তাই বলাই যায়, গোষ্ঠী সংক্রমণ কম থাকায় বিদ্যালয়ই এখন শিশুদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা।