কানাডার বাসিন্দাদের দশমিক ৩৩ শতাংশ ট্রান্সজেন্ডার হিসেবে শনাক্ত হয়েছে। বুধবার প্রকাশিত ২০২১ সালের আদমশুমারির তথ্যে এমনটাই জানা গেছে।
গত বছর সংগৃহীত জাতীয় খানা জরিপের তথ্য বলছে, কানাডায় ট্রান্সজেন্ডার বা নন-বাইনারির মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ৮১৫ জন। এর মধ্যে ৩১ হাজার ৫৫৫ জন ট্রান্সজেন্ডার নারী ও ২৭ হাজার ৯০৫ জন ট্রান্সজেন্ডার পুরুষ। বাকি ৪১ হাজার ৩৫৫ জন নন-বাইনারি।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা এই প্রথম জন্মকালীন লিঙ্গ ও তৎপরবর্তী লিঙ্গ পরিচয়ের মধ্যকার পার্থক্য সামনে আনলো। এটা প্রান্তিক জনগণ সম্পর্কে ও পদ্ধতিগত যেসব বাধার মুখে তাদের পড়তে হয় সে সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা দেবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ট্রান্সজেন্ডারদের নিয়ে কাজ করা ফায়ে জনস্টন বলেন, বরাবরই আলোচনা ও গণনার বাইরে থাকা ট্রান্সজেন্ডারদের সরকারের স্বীকৃতি দেওয়ার অর্থ আছে। দেশজুড়ে ট্রান্সজেন্ডারদের কী ধরনের স্বাস্থ্য অন্যায্যতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে তা বুঝতে সহায়ক হবে এটি।
আগের শুমারিতে কেবল লিঙ্গ পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালের সংস্করণে জন্মকালীন লিঙ্গ পরিচয় সম্পর্কেও প্রশ্ন রাখা হয়। শুমারিতে ট্রান্সজেন্ডারদের অন্তর্ভুক্তি লিবারেল সরকারের এলজিবিটি কমিউনিটিকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার বৃহত্তর উদ্যোগের অংশ।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা বলছে, তাদের কাজ হচ্ছে ফেডারেল সরকার ও ফেডারেল সরকারের বাইরে সাক্ষ্য প্রমাণভিত্তিক নীতি উন্নয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তার জন্য জেন্ডার-বেজড অ্যানালাইসিস প্লাস (জিবিএ+) ডাটা হাব তৈরি করা।
জনস্টন বলেন, এলজিবিটি ইস্যুতে এই সরকারের উদ্যোগ কিছু দিক দিয়ে ভালো। তাই বলে নিখুত বলা যাবে না। এলজিবিটি ইস্যুতে এই সরকারের বিরুদ্ধে আমার সবচেয়ে বড় সমালোচনা হলো তারা সঠিক স্থানে সঠিক কথাগুলো বলে। কিন্তু মূল বিষয় হলো সেগুলোর বাস্তবায়ন, যা সত্যি সত্যিই আমি দেখতে চাই।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ফেডারেল এলজিবিটিকিউ২ কর্মপরিকল্পনায় সরকারের ১০ কোটি ডলার ঘোষণা ঐতিহাসিক। কিন্তু ঘোষণাটি এসেছে অনেক দেরিতে এবং পরিমাণও খুব কম।
এটা সময়ের ব্যাপার বলে মন্তব্য করেন ট্রান্সমাসকুলাইন নন-বাইনারি লেখক ও কর্মী জেমা হিকি। তিনি বলেন, এলজিবিটিকিউ+ এর অধিকার নিয়ে ২০ বছর ধরে কথা বলে আসার কারণে অনেক পরিবর্তনই আমি প্রত্যক্ষ করেছি। এ ধরনের পরিবর্তন বিশেষ করে আদমশুমারিতে স্থান পাওয়ার প্রসঙ্গটি এলে বলতে হবে এটা দীর্ঘ অপেক্ষার পরে এলো।
প্রায় পাঁচ বছর আগে প্রথম কানাডিয়ান হিসেবে লিঙ্গ নিরপেক্ষ জন্ম সনদ পান হিকি।