আদিবাসী শিশুদের দেহাবশেষ পাওয়ার ঘটনায় বড় ধরনের প্রশ্নের মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও তার সরকার। ছয় বছর আগে করা ট্রুথ অ্যান্ড রিকসিলিয়েশন কমিশনের সুপারিশ কেন বাস্তবায়ন করা হলো না সেই প্রশ্ন উঠছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইস্যুটিতে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জাস্টিন ট্রুডো। যদিও প্রতিশ্রুতির বিস্তারিত জানাননি তিনি।
সোমবার অটোয়াতে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে সাবেক ক্যামলুপস ইন্ডিয়ান রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের মাঠে ২১৫ শিশুর দেহাবশেষ পাওয়া প্রসঙ্গে কথা বলছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এ ঘটনাকে হৃদয়বিদারক আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, আদিবাসী শিশুদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেসিডেন্সিয়াল স্কুলে নিয়ে আসার লজ্জাজনক এ নীতিতে তিনি আতঙ্কিত।
ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশনও ২০১৫ সালে এ নীতিকে সাংস্কৃতিক গণহত্যা বলে উল্লেখ করেছিল। রেসিডেন্সিয়াল স্কুলে যে হাজারো আদিবাসী শিশু মারা গেছে তাদের চিহ্নিত ও স্মরণ করার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে নিরব থাকেন জাস্টিন ট্রুডো। তিনি বলেন, অবশ্যই এ ব্যাপারে অনেক কিছু করার আছে এবং আমরা সেগুলো করব। সমন্বয় সাধনের প্রতি সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই সঙ্গে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সত্যের প্রতিও এবং সেটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সুতরাং কমিউনিটিগুলোর চাহিদা কি এবং আমাদের কি জানা প্রয়োজন সে ব্যাপারে তাদের সঙ্গে আমরা কাজ করব।
জাতীয়ভাবে রেসিডেন্সিয়াল স্কুলে শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর তালিকা সংরক্ষণ ও উন্নয়নে ২০১৯ সালের বাজেটে ৩ কোটি ৩৮ লাখ ডলার বরাদ্দের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর থেকে এটি করা হচ্ছে এবং এখন পর্যন্ত সেখানে ৪ হাজার ১১৮ শিশুর নাম রয়েছে। এটা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন। তবে এ নিয়ে গবেষণার চেষ্টা চলছে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের সংখ্যা বাড়তে পারে। ডিপার্টমেন্ট অব ক্রাউন-ইনডিজিনাস অ্যাফেয়ার্সের কাছ থেকে এককালীন তহবিল সহায়তা এ নিয়ে কাজ শুরু করেছে সেন্টার।
আদিবাসী শিশুদের দেহাবশেষ পাওয়ার ঘটনায় আদিবাসী নীতি ও অর্থায়ন দেখভালের দায়িত্বে থাকা তিনজন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা করছেন বলে সোমবার ঘোষণা দিয়েছিলেন জাস্টিন ট্রুডো। পরে সন্ধ্যায় তিনি মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক ডাকেন। এর মধ্যেই নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) হাউজ অব কমন্সে জরুরি বিতর্কের দাবি তোলে।
এনডিপি নেতা জাগমিত সিং বলেন, ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশনের ৯৪টি সুপারিশের যথেষ্ট বাস্তবায়ন করেনি সরকার। পার্লামেন্ট হিলে পতাকা অর্ধনমিত রাখার মতো প্রতিকী মনোভাব লিবারেল সরকারের জন্য ভালো কিছু নয়। এই গণহত্যার পরিপ্রেক্ষিতে অন্যায়ের প্রতিকারের বিষয়ে আমাদের যে অঙ্গীকার সে ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।