বর্ণবাদী মন্তব্য ও মাস্ক পরিহিত এক চীনা নারী শিক্ষার্থীকে বাসের মধ্যে জাপটে ধরার অপরাধে এক কানাডিয়ানকে চার মাস গৃহ অন্তরীণ রাখার আদেশ দিয়েছেন আদালত। অন্টারিওর বিচারক হাওয়ার্ড বোরেনস্টেইন মাইকেল হেনেসি নামে ৪৭ বছর বয়সী ওই কানাডিয়ানকে এই সাজা দেন।
রায়ে বিচারক বলেন, শারীরিক আক্রমণ অতোটা গুরুতর না হলেও এর প্রভাবটা অনেক ব্যাপক। বর্ণবাদের কাছে সমাজ কতটা অসহায়, কত দ্রুত এটা ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং ভুক্তভোগীরাই বা কতটা আতঙ্কিত ও নাজুক এ ঘটনা তারই প্রমাণ। বর্ণবাদ শারীরিক আক্রমণও ডেকে আনতে পারে এবং সেটাই এক্ষেত্রে হয়েছে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে হেনেসি ডাউনটাউনের একটি বাসে চেপে বসেন তখন ওই চীনা শিক্ষার্থী নিজের কাজে ডুবে ছিলেন। এ সময় মেডিকেল মাস্কে ঢাকা ছিল চীনা শিক্ষার্থীর মুখ। বাসে ওঠার চার মিনিটের মধ্যে হেনেসি নিজেকে কানাডিয়ান বলে জাহির করে ওই শিক্ষার্থীর উদ্দেশে অশ্লীল কতাবার্তা বলতে থাকেন। চীনা নাগরিকদের উদ্দেশেও অপমানসূচক কথাবার্তা বলতে বলতে ওই শিক্ষার্থীকে ফিরে যেতে বলেন হেনেসি। ওই শিক্ষার্থী এসব কথাবার্তা রেকর্ড করতে থাকলে ফোনটি কেড়ে নেওয়ার উদ্দেশে ওই শিক্ষার্থীর হাত জাপটে ধরে চিৎকার করতে থাকেন হেনেসি।
রায় গোষণার পর বিচারক বোরেনস্টেইন বলেন, ওই শিক্ষার্থীর ওপর এ ঘটনার প্রভাব মারাত্মক। এ ঘটনার পর ওই শিক্ষার্থী তার সেমিস্টার শেষ করতে পারেননি এবং থেরাপি নিতে বাধ্য হতে হয়েছে।
বিচারক বলেন, হেনেসি অনেক দিন ধরেই মাদকাসক্ত এবং ঘটনার সময়ও তিনি মদ্যপ ছিলেন। এ ঘটনায় তিনি ওই শিক্ষার্থীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এবং তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার শৈশবও কেটেছে হিংসার মধ্য দিয়ে। বয়স যখন পাঁচ বছর তখনই তার বাবা তার মাকে হত্যা করেন।
উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এশীয়দের বিরুদ্ধে উত্তর আমেরিকায় অপরাধ বেড়ে গেছে। কোভিড-১৯ মহামারির জন্য তাদেরকে দায়ী করা হয়ে থাকে। টরন্রেটা পুলিশের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনও বলছে, অনেক এশিয়ান কমিউনিটি বর্ণবাদী আচরণের লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে। তাদেরকে উদ্দেশ্য করে অপমানসূচক নানা মন্তব্যের পাশাপাশি আঘাত করা হচ্ছে। অনেক সময় তাদের লক্ষ্য করে থুথুও ছোড়া হচ্ছে।